শিরোনাম :
মৌলবাদ দেশে শান্তি আনতে পারে না
ডিসিনিউজ : ‘আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চাই। মিথ্যা গুজব এবং মৌলবাদের সহিংসতা থেকে বাংলাদেশ সব সময় দূরে থাকতে চায়। বাংলাদেশে যে সাম্প্রদায়িতক সম্প্রীতি রয়েছে তা একটি মহল ধংস করতে চায়। ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ায় যে হামলা হয়েছে তা উসকানিমূলক এবং পরিকল্পনা মাফিক করা হয়েছে।’ ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোবকালে এসব বলেন বক্তারা।
৪ নভেম্বর, শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আয়োজনে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদের বিক্ষোব সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে বিভিন্ন সংগঠন, অঙ্গ-সংগঠনের বক্তারা ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান প্রশাসনের কাছে। তারা বলেন, বাংলাদেশ সব সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী, কিন্তু একটি মহল সম্প্রীতির এই শান্তিকে প্রতিহত করতে চায়। যা কখনোই কারো কাম্য নয়। তাই প্রশাসনের উচিত কঠোরভাবে সাম্প্রদায়িক হামলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
বক্তারা সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার সম্প্রীতির কথা বললেও বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে, সরকার যেন অচিরেই এসব বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসেন।
তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়ে বলেন, আমরা আর হামলা চাই না, আমরা সম্প্রীতির মাধ্যমে একটি সুন্দর এবং শান্তির বাংলাদেশ চাই। আমাদের সচেতন বিবেকবান মানুষদের এক সাথে হয়ে মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। মৌলবাদ কখনোই দেশের মধ্যে শান্তি আনতে পারে না।
সমাবেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সংগঠন, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতি, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় পূজা কমিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক সংগঠন এবং অঙ্গ-সংগঠন অংশ নেয়। সমাবেশ শেষে সমাবেশকারীরা প্রেসক্লাবের সামনে র্যালি বের করে।
এদিন খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন সমাবেশে যোদ দেয়। এসময় এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও একাত্মতা জানান।
ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ২ নভেম্বর হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর বর্বরোচিত হামলা করা হয়। জানা যায়, ফেসবুকের মাধ্যমে অর্ধশিক্ষিত একজন হিন্দু যুবক ইসলাম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করে। এতে নাসিরনগরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার উগ্রবাদী কিছু মৌলবাদী মুসলমান এবং মাদ্রাসার ছাত্ররা মিলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৫ টি মন্দির স্থানীয় হিন্দুদের বাড়িঘর ভাংচুর এবং লুটপাট করা হয়। হামলার সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একদল মৌলবাদী উগ্র মুসলমান হামলা করলেও এলাকার শান্তি প্রিয় মুসলমান যুবকেরা তা প্রতিহত করার চেষ্টা করেন এবং আহত হন। হামলার ঘটনা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়লে দেশসহ বিশ্ব মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক মাধ্যমেও এ নিয়ে নানা সমালোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক এবং সুশিল সমাজ এখনই সরকারকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানায়, যে মৌলবাদীমহল কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে।
আরবি/আরএসআর- ৪ নভেম্বর, ২০১৬