শিরোনাম :
পরিবেশ দূষণ, অপরিকল্পিত শহরায়ন ও কোর্ট অব ওয়ার্ডস্-এর হয়রানিতে নাকাল সাভার এলাকা: প্রতিবাদ স্থানীয়দের
পরিবেশ দূষণ, অপরিকল্পিত শহরায়ন ও কোর্ট অব ওয়ার্ডস্-এর হয়রানিতে নাকাল ঐতিহ্যবাহী সাভার এলাকা। বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও কোর্ট অব ওয়ার্ডস্-এর অপরিকল্পিত কার্যকলাপে সাভার এলাকার পরিবেশ নাজুক হয়ে পড়েছে।
সাভার উপজেলার বিরুলিয়া ও সাভার ইউনিয়ন এবং সাভার পৌরসভার পূর্বাংশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন কলকারখানার অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা, পানি নিষ্কাশনের বাধা সৃষ্টি এবং কোর্ট অব ওয়ার্ডস্ নামে অস্তিত্বহীন এক সংস্থার হয়রানির মাধ্যমে জীবনযাত্রা চরম হুমকীর মুখে বলে উল্লেখ করেন সাভার এলাকার স্থানীয় জনগণ।
২৭ জানুয়ারি, (শনিবার) পরিবেশ দূষণ, অপরিকল্পিত শহরায়ন ও কোর্ট অব ওয়ার্ডস্-এর হয়রানির কারণে এলাকার জনগণ এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। সকাল সাড়ে ৯টায় সাভার পলুর মার্কেট এলাকায় রাস্তায় স্থানীয় জনগণ প্রতিবাদ ব্যানার নিয়ে জড়ো হয়ে এসব কারখানা ও সংস্থার বিরুদ্ধে শ্লোগান এবং বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের (বিসিএ) প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিওর নেতৃত্বে এই সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে ঢাকা থেকে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল ইগ্নাসিওস হেমন্ত আই. কোড়াইয়ার নেতৃত্বে যোগ দেন ঢাকা ক্রেডিটের বোর্ড অব ডিরেক্টর পিটার গোমেজ, ডিরেক্টর পিটার রতন কোড়াইয়া, বিসিএ বনানী শাখার সভাপতি সেবাস্টিয়ান বাড়ৈসহ আরো অনেকে।
এ ছাড়াও সাভার পৌরসভার প্যানেল মেয়র শেখ সেলিম মিয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল আওয়াল, আব্দুল সামাদ মোল্লা, প্রভাত ডি’রোজারিও, রবার্ট প্রদীপ রোজারিও, শাহ আলম, মাইকেল জন গমেজ, তপন টমাস রোজারিও, প্রতাপ আগষ্টিন গমেজসহ আরো অনেক নেতৃবৃন্দ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ ও মিছিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক, উন্নয়নমূলক, ছাত্র সংগঠন ও অঙ্গ সংগঠনের প্রতিনিধিগণও অংশ নেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘আমাদের ঐতিহ্যবাহী সাভার এলাকা আজ বিভিন্ন কোম্পানির অপরিকল্পিত কার্যকলাপ, তাদের কারখানার ময়লা পানি ও আবর্জনা ফেলা, কোর্ট অব ওয়ার্ডস্রে হয়রানির কারণে হুমকির মুখে। সাভারের সৌন্দর্যমন্ডিত পরিবেশ আজ ধ্বংসের মুখে। যত্রতত্র শিল্পকারখানা, অপরিকল্পিত খামার গড়ে ওঠার কারণে পরিবেশ চরম বিপর্যয়ের মুখে। পাশাপাশি চলছে অপরিকল্পিত নগরায়ন। এ ছাড়াও একটি অস্থিত্বহীন সংস্থা কোর্ট অব ওয়ার্ডস্ জনগণকে দীর্ঘদিন হয়রানি করে আসছে। আমরা দ্রুত এর প্রতিকার ও অবসান চাই।’
বক্তারা বলেন, ‘এলাকায় মাদকদ্রব্য ভয়াভহভাবে বিস্তার হচ্ছে, যা তরুন সমাজকে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হওয়ার উচিত। পাশাপাশি সাধারণ জনগণেরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন।’
তাঁরা বলেন, ‘এক সময় ডায়েরি ফার্মের পরিত্যক্ত নোংরা পানি কৃষকের শত শত বিঘা জমি ধ্বংস করে কৃষককুলকে সর্বশান্ত করেছিল। তার কারণ ছিল পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাব। একটি সরু খাল ছিল, যা দিয়ে প্রয়োজনীয় পানি যেতে পারতো না, ফলে সেই নোংরা পানি কৃষকের জমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। বর্তমানের সেই সরু খালটিও ভূমিদস্যুদের দখলে চলে গেছে। তারা খাল দখল করে ভরাট করেছে, ফলে পানি নিষ্কাশনের আর কোনো ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। আমরা এসব জঘন্য কাজের জন্য প্রশাসনকে বিভিন্ন সময়ে অবহিত করেছি, কিন্তু কারখানা মালিক, কোর্ট অব ওয়ার্ডস্ এবং ভূমিদস্যুরা কোনোভাবে তাদের দৌরাত্ম বন্ধ করছে না। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর আশু সমাধান ও প্রতিকার চাই।’
সমাবেশ শেষে সাধারাণ জনতা একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন ও সমাবেশে কয়েকটি দাবি উপস্থাপন করেন।
সমাবেশে উত্থাপিত দাবি
আরবি/আরপি/২৭ জানুয়ারি, ২০১৮