শিরোনাম :
লাখো খ্রিষ্টভক্তের প্রার্থনায় পালন করা হলো পানজোরার মহান সাধু পাদুয়ার আন্তনীর পর্ব
লাখো খ্রিষ্টভক্তের আকুতি ও প্রার্থনায় সিক্ত হলো পানজোরার সাধু আন্তনীর তীর্থ স্থান।
প্রতি বছরের মতো এবার লাখো খ্রিষ্টভক্ত মহান পাদুয়ার সাধু আন্তনীর পর্ব পালনে অংশগ্রহণ করেন।
২ ফ্রেব্রুয়ারি (শুক্রবার) কুয়াশা ভেদ করে লাখো খ্রিষ্টভক্ত পর্বীয় খ্রিষ্টযাগে অংশ নেয়। সারা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের আন্তনী ভক্তদের অংশগ্রহণের কারণে দুটি পর্বীয় খ্রিষ্টযাগ অনুষ্ঠিত হয় প্রতি বছর। প্রথম খ্রিষ্টযাগ অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয় খ্রিষ্টযাগ অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০টায়।
পর্বীয় খ্রিষ্টযাগে ঢাকার আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক বলেন, ‘তীর্থযাত্রায় সাধু আন্তনী আমাদের হৃদয়ে প্রবেশ করেন। যখনই তীর্থযাত্রার কথা বলা হয়, তখন একটি কথা উঠে আসে, আর তা হলো ‘ভালবাসা’। সাধু আন্তনী আমাদের ভালবাসেন, তাই খ্রিষ্টও আমাদের ভালবাসেন।’
তিনি বলেন, ‘খ্রিষ্টের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরকে দেখতে পাই। তীর্থযাত্রায় যারা আসেন, তারা খ্রিষ্টের কথা শোনেন এবং আধ্যত্মিকভাবে আমরা তাঁর দর্শন পাই।’
‘কষ্ট ছাড়া তীর্থ হয় না। আমরা কষ্টের মাধ্যমে তীর্থ করেই আনন্দ পাই। তীর্থের মাধ্যমে আমাদের মন পরিবর্তন হয়। মন পরিবর্তন শুধু পাপ বর্জন করা নয়, সবচেয়ে বড় পাওয়া ঈশ্বরের ভালবাসা পাওয়া। ঈশ্বরের ভালবাসায়ই জীবন পাল্টে যায়। তীর্থে এসে আমরা সাধু আন্তনীর মাধ্যমে প্রার্থনা করি এবং সাধু আন্তনী সেই প্রার্থনা খ্রিষ্টের কাছে পৌঁছে দেন।’ বলেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক।
পানজোরার সাধু আন্তনীর তীর্থোৎসব বাংলাদেশের অতি পুরানো একটি মিলন মেলা। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে লাখ লাখ ভক্তরা সাধু আন্তনীর তীর্থে যোগ দেয়। খ্রিষ্টভক্তদের পাশাপাশি মুসলমান, হিন্দু এবং অন্যরাও তাদের বিশ্বাসের প্রার্থনা জানাতে এই তীর্থস্থানে আসেন। তাঁরা সাধু আন্তনীর নিকট মানত দিয়ে বিভিন্ন উদ্দেশ্য রাখেন এবং তা পূরণও হয়। প্রতি বছরই এমন অসংখ্য সাক্ষ্য নিয়ে এসব আন্তনীভক্তরা হাজির হন।
গবাদী পশু, পায়রা, মোমবাতি, খাবারসহ বিভিন্ন কিছু নিয়ে আন্তনী ভক্তরা প্রতি বছর সাধু আন্তনীর পদতল সিক্ত করেন। বিশ্বাসের উচ্চতায় উঠে তারা সাধু আন্তীর ধন্যবাদের সাক্ষ্যও হন।
এবারে পর্বীয় খ্রিষ্টযাগে কার্ডিনাল প্যাট্রিকের সাথে আরো ছিলেন, বাংলাদেশস্থ ভাতিকানের রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরী, ঢাকার সহকারী বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ, নাগরীর পাল-পুরোহিত জয়ন্ত এস. গমেজসহ অসংখ্য ব্রতধারী।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির প্রথম শুক্রবার পানজোরায় সাধু আন্তনীর তীর্থ পালন করা হয়। তীর্থের আধ্যত্মিক প্রস্তুতির জন্য পূর্বে থেকেই প্রতিদিন নভেনা প্রার্থনা চলতে থাকে। ঐতিহ্য অনুযায়ী এবারও প্রথম শুক্রবার হিসেবে ২ ফ্রেব্রুয়ারি এই তীর্থোৎসব পালন করা হয়।