শিরোনাম :
তরিকুল এখন সফল গোলাপ চাষী
ফুলের চাষে ভাগ্য বদলিয়েছে ঝিগরগাছার তরিকুল। তরিকুল এখন ফুল চাষ করে, তা বিক্রি করে সচ্ছ্বল জীবনের পথে হাঁটছে।
যশোর জেলার ঝিগরগাছা থানার গদখালীর পানিসারা গ্রামের ১৭ বছরের ছেলে তরিকুল ইসলাম। পরিবারের সদস্য চার জন। মা, দুই বোন আর তরিকুল। পিতৃহীন তরিকুলের মা অন্যের মাঠে জোন (মাঠে কাজ) দিয়ে থাকেন।
তরিকুলের দুই কাঠা ভিটা বাড়ি ও মাঠে সাত কাঠা জমি আছে। বাবা মারা যাওয়ার পর তরিকুলের পড়াশুনা তরি আর এগোয়নি। অভাবের তাগিদে সেও তার মায়ের সাথে মাঠে জোন দিতো ও নিজেদের জমিতে ধান চাষ করতো। এতে আর জীবনের চাকা এগোতে চাচ্ছিলো না।
বছর তিনেক আগে তরিকুল ধান চাষ বাদ দিয়ে গোলাপ চাষ করার কথা ভাবে। সে খেয়াল করে দেখলো, গোলাপ গাছ রোপন করে বর্তমানে বাগান থেকে ভালো টাকা আয় করা সম্ভব।
এরপরই সে শুরু করে গোলাপফুলের চাষ। বদলাতে থাকে তার জীবনের মোড়।
তরিকুলের সফল হওয়ার সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বলেন, ‘বছর চারিক আগে আমার বাবা মারা যায়। আমাদের দেখাশুনা করার জন্য মা ছাড়া কেও ছিলনা। আমরা দিন আনি দিন খাইতাম, অল্প বয়সে আমি মাঠে জোন দিছি। আমি দেখতাম, আমগোর এলাকার বেশির ভাগ কৃষক ফুল বাগান করতো। ফুল বাগান থেকি নাকি ভালো টাকা আয় হয় আমি শুনেছি। তার পর আমি একদিন সিদ্ধান্ত নেই যে আমাদের ঐ জমিতে ধান বাদ দিয়ে গোলাপ চাষ করবো কিন্তু পযাপ্ত অর্থ ছিলনা।’
তরিকুল জানান. ‘মা কিছু টাকা সমিতি থেকে এনে দেয়, আর আমি কিছু টাকা এলাকার এক বড় ভাইর কাছ থেকে ধার নেই। সেই টাকা দিয়েই বাগান করেছি। এখন আর আমাদের আগের মতোন কষ্ট করা লাগেনা।’
‘সাত কাঠা জমিতে আমি গোলাপ বাগান করছি, সেখান থেকে প্রতি দিন প্রায় ১৫০০ টাকার ফুল আমি বিক্রি করি। এতে আমাদের সংসার ভালোভাবে চলে যায় ও কিছু টাকাও জমাতে পারছি’ বলেন তুরিকুল।
ফুল চাষের বিষয়ে গদখালী ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম-আহ্বায়ক খালেক সরকার বলেন, ‘তরিকুলের মতো অনেক ছেলেই আছে, যারা এখন ফুলের বাগান করছে। তবে তরিকুলের বয়স অনেক কম এবং অনেক পরিশ্রম করে বাগানটি করেছে। সে বাগান করা সম্পর্কে পরামর্শ নিতে আমাদের কাছে আসতো এবং আমরা তাকে সঠিক পরামর্শ দিয়েছি। সে এখন একজন সফল ফুল চাষী।’
তরিকুল ফুল তোলা ও বিক্রয় সম্পর্কে বলেন, ‘সকাল ছয়টার আগে আমি বাগান থেকে ফুল তুলে আটি করি। প্রতি আটিত ১০০ পিচ করে ফুল থাকে। প্রতিদিন দিন আমি বাগান থেকে ১০-১৫ আটি করে গোলাপ তুলি ও গদখালীতে ফুলের হাটে সকাল সাতটার মধ্যে নিয়ে যাই। সেখানে বেপারীদের কাছে ফুল বিক্রি করি।’
আরবি/আরপি/২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮