শিরোনাম :
কাককোর ৭ম বার্ষিক সাধারণ সভা
‘আজ এই দিনে আমরা শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি ক্রেডিট ইউনিয়নের অগ্রপথিক ফাদার চালর্স জে. ইয়াং সিএসসিকে’ কাককোর বার্ষিক সাধারণ সভায় এভাবেই আবেগাপ্লুত হয়ে বললেন কাককোর চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় ফার্মগেট অলিভ রেস্টুরেন্টে দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস্ (কাককো) লি: এর ৭ম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় চেয়ারম্যান রোজারিও বলেন, ‘কাককো প্রতিষ্ঠার একটি বড় উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন সমবায়ে ঋণখেলাপির কারণ। একই সদস্য বিভিন্ন সমিতির সদস্য হয়ে ঋণ গ্রহণ করে। ঋণের বোছা আতিরিক্ত হওয়ার ফলে ঋণের কিস্তি দিতে পারে না। তাই সমিতির যেমন ক্ষতি হয়, সেই সদস্যও সামাজিকভাবে সমস্যায় পড়ে। তা ছাড়া এর কারণে পরিচালনা পর্ষদেও এর জন্য চাপ সৃষ্টি হয়। এই কারণগুলো বর্তমানে সমিতির জন্য ঝুঁকি।’
‘২০০৭ সালে কাককো প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনা শুরু হয়। ২০১২ সালে কাককো রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার পর কাককো কার্যক্রম শুরু করে, যা এখন নিজ পায়ে দাঁড়িয়েছে,’ বলেন চেয়ারম্যান রোজারিও।
চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিওর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের যুগ্ম নিবন্ধক জনাব মো. রুহুল আমিন।
প্রধান অতিথি যুগ্ম নিবন্ধক রুহুল আমিন বলেন, ‘আজকের এই আলোচনাগুলো খুবই প্রাণবন্ত। খ্রিষ্টান সমিতির এজিএমে যেভাবে আলোচনা হয়, অন্য সকল এজিএমে তার ৫ শতাংশ আলোচনাও হয় না। যে কারণে আপনাদের সমিতিগুলো এতটা উন্নয়নের পথে এগিয়ে।’
তিনি সমবায়ের ২১ বিধি নিয়ে বলেন, ‘সমবায়ের ২১ বিধি বর্তমানে একটি সাংঘর্ষিক বিষয়। এখানে ৩ হাজারের বেশি সদস্য হলে প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্বাচন ও বার্ষিক সাধারণ সভার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু প্রতিনিধি নির্বাচন থেকে শুরু করে আর কোনো কিছুর কথাই এখানে উল্লেখ নেই, যে কারণে একটি সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমরাও চাই না, প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্বাচন এবং সাধারণ সভা হোক, এতে মিলনমেলা হয় না।’
‘কাককো ধীরে ধীরে এখন বড় হচ্ছে। সামনে কাককো ঢাকাসহ ময়মনসিংহ ও রাজশাহী এই তিন কর্ম এলাকায় কার্যক্রম চালাতে পারে যেন আমরা তার জন্য ডিসি বরাবর সুপারিশ করবো,’ বলেন প্রধান অতিথি রুহুল আমিন।
তিনি বলেন, ‘কালব এবং কাককো সম্পূরক প্রতিষ্ঠান। কালবে শুধু ক্রেডিট ইউনিয়ন সদস্য হতে পারে, কিন্তু কাককোতে ক্রেডিট ইউনিয়ন, বহুমুখী, সমবায় সমিতিসহ সকলেই সদস্য হতে পারে। তাছাড়া কাককোর কার্যক্রমগুলোও ব্যতিক্রমী। তাদের ট্রেনিং পোগ্রামগুলো যুগোপযোগী এবং প্রয়োজনীয়’।
‘সরকার সমবায়ের ওপর যে ১৫ শতাংশ টেক্স ধার্য করেছে, সেই বিষয়ে আপনাদের ইউনিয়নের মাধ্যমে আন্দোলন করে আসতে হবে,’ জানান প্রধান অতিথি আমিন।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ফাদার লিটন রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল হেমন্ত আই. কোড়াইয়া, দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান হাউজিং সোসাইটির চেয়ারম্যান আগস্টিন পিউরীফিকেশন, ভাইস-চেয়ারম্যান অনিল লিও কস্তা, ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার বিপুল লরেন্স গমেজ, ডিরেক্টর রূপন পিউরীফিকেশনসহ কাককোর পরিচালনা পর্ষদ এবং প্রতিনিধিবৃন্দ।
এ দিন অন্যান্য বক্তারা বলেন, ‘আজকের সাধারণ সভা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকগুলো সদস্য সমিতির লক্ষাধিক সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করছে আজকের এজিএম। আমরা বিগত সময়ে ক্রেডিট ইউনিয়নের প্রয়োজনীয়তা প্রত্যক্ষ করেছি। আমাদের অনেক ক্রেডিট ইউনিয়ন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনার জন্য সকলের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে আজকের এই কাককো।
এদিন কাককোর সেক্রেটারি সঞ্জিত লিও গমেজ বার্ষিক সাধারণ সভার সঞ্চালনা এবং রিপোর্ট, ট্রেজারার জেমস্ নিখিল দাস সমিতির আর্থিক বিষয় উপস্থান করেন।
বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে কাককোর ভাইস-চেয়ারম্যান যোসেফ বিভাস গমেজ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভা সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
আরবি.আরপি.২৮ ফেব্রুিয়ারি, ২০১৮