শিরোনাম :
আমি উন্নয়ন ও সাফল্যের সাক্ষী : নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে শোভযাত্রা ও আলোচনা সভা
‘স্বল্পোন্নত দেশের স্ট্যাটাস হতে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আমি একজন প্রত্যক্ষ সাক্ষী’ বলে মন্তব্য করেন নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিরেক্টর অব ডেভলপমেন্ট ফাদার ফ্র্যাংক কুইনলিভান সিএসসি। এক আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
২২ মার্চ, আনন্দঘন ও ঐতিহাসিক মূহুর্তকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-পরিবার আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। শোভাযাত্রাটি নিজস্ব ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। পরে মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এর রেজিস্ট্রার ফাদার আদম এস. পেরেরা সিএসসি এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
ফাদার ফ্র্যাংক কুইনলিভান বলেন, ‘আমি ৩৮ বছর আগে আমেরিকা হতে বাংলাদেশে এসেছি। যখন প্রথম বাংলাদেশে আসি তখন এদেশ বর্তমান সময়ের মতো এত উন্নত ছিল না। আমি দেখেছি এদেশের মানুষ ক্ষুধায় কষ্ট পেয়েছে। দারিদ্র্যপীড়িত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, অনুন্নত পরিবহন ব্যবস্থা ও অনুন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারও আমি এ দেশে প্রত্যক্ষ করেছি। কিন্তু এখন আর সেই আগের অবস্থা নেই। বাংলাদেশ এখন অনেক উন্নত।’
‘বিশ্বদরবারে এখন বাংলাদেশের নতুন পরিচয়–মধ্যম আয়ের দেশ। এ অর্জন আত্মমর্যাদার, অহংকারের এবং গৌরবের। আমি আজকের এই বিশেষ দিনে খুবই আনন্দিত কারণ আমি এ দেশে অবস্থান করে স্বল্পোন্নত দেশের স্ট্যাটাস হতে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সাফল্যের অংশীদার হতে পেরেছি। আমি বাংলাদেশের উন্নয়নের কালের সাক্ষী।’ বলেন ফাদার ফ্রাঙ্ক কুইনলিভান।
স্বাগত বক্তব্যে ফাদার আদম বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের অভিযাত্রায় দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ, যার স্বীকৃতিস্বরূপ আমরা ‘উন্নয়নশীল দেশ’ হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছি। একজন বাঙালি ও বাংলাদেশী হিসেবে আমি এটিকে অনেক বড় অর্জন ও গৌরবের বিষয় বলে মনে করি। আমি বিশ্বাস করি খুব দ্রুত আমরা উন্নয়নশীল দেশ হতে উন্নত দেশের স্বীকৃতি ও মর্যাদা লাভ করতে পারবো।’
মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক- তিনটি শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে।’
দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে ফাদার আদম বলেন, ‘নটর ডেম নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয়, যা দিন দিন বৃদ্ধি লাভ করছে। বর্তমানে এখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীবৃন্দ সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে।’
এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নের দিক, দেশ ও জাতি গঠনে নারীর ভূমিকা ও অগগ্রামীতার কথা তুলে ধরেন।
এ ছাড়াও শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন-চিত্র, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বর্তমান বাস্তবতা এবং বাংলার সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে উপস্থাপনের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন অধ্যাপক পরিমল চন্দ্র দত্ত, অধ্যাপক আজিজুর রহমান, সহকারি অধ্যাপক দিলীপ কুমার সরকার ও সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।
বক্তাগণ ২০২১ সাল নাগাদ দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যশা ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়া বিষয়েও তারা আশা প্রকাশ করেন।
এ ছাড়াও অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক, নৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের প্রভূত উন্নতি হয়েছে বলে তাঁরা মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, আনন্দ শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষকম-লী, শিক্ষার্থী এবং বেশ কিছু অভিভাবক অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আহমেদ তাহসিন শ্যামস।
আরবি.আরপি.২৩ মার্চ, ২০১৮