ঢাকা ,
বার : বুধবার
তারিখ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ১১ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ ঢাকায় ভাসমান হোটেল : অল্প টাকায় নিরাপদ রাত্রিযাপন

ঢাকায় ভাসমান হোটেল : অল্প টাকায় নিরাপদ রাত্রিযাপন

0
3634

ভাসমান নৌকা দিয়ে বানানো ‘ফরিদপুর মুসলিম হোটেল’টির অবস্থান রাজধানী ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে।

মাত্র ৩৫ টাকা হলেই কাটানো যাবে এক রাত। বুড়িগঙ্গা নদীর বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের ১০০টির ও বেশি ভাসমান হোটেল ছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেসব এখন হারিয়ে গেছে।

বুড়িগঙ্গার এই ভাসমান হোটেলগুলোতে আছে খুবই সস্তায় রাত যাপনের ব্যবস্থা। তবে হোটেলগুলো নদীতে হলেও সাধারণত ভেসে বেড়ায় না। রাত ১২টা পর্যন্ত এ হোটেলগুলোতে প্রবেশ করা যায় ও পরের দিন সকাল ১১টার মধ্যে ছেড়ে দিতে হয়

তবে এখানে অনেকেই বছরের পর বছর থাকছেন। এর একেকটিতে রাত কাটানোর জন্য দিতে হয় একেক রকম ভাড়া। আর ভাড়ার তারতম্যের সঙ্গে এখানে অবস্থানকারীদের জন্য সেবার ক্ষেত্রেও থাকে তারতম্য। ৭০ টাকায় সিঙ্গেল কেবিন ও ১০০ টাকায় ডাবল কেবিনের ব্যবস্থা রয়েছে। এমনকি ৩৫ টাকায় রাত কাটানোর ব্যবস্থাও আছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে- কোনো দরিদ্র শ্রমিককেই টাকার অভাবে বেশির ভাগ সময় ফিরিয়ে দেয়া হয় না। হোটেলের এক কোণে তাদের মাথা গোঁজার একটু ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। এমনটাই জানালেন হোটেলের মালিক মোহম্মদ মোস্তফা মিয়া।

ভাসমান নৌকা হোটেলের ঐতিহ্য বেশ প্রাচীন। পন্চাশ বছর আগেও এসবের অধিকাংশ ছিল হিন্দু হোটেল। বুড়িগঙ্গার বুকে ভাসতো একশোটিরও বেশি নৌকা। মূলত ঢাকার বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষই এসব হোটেলে থাকা ও খাওয়ার জন্য যেত। এখন নৌকার সংখ্যা কমে চারটিতে দঁড়িয়েছে। এগুলো এখন ব্যবহৃত হচ্ছে শুধু থাকার জন্য।

বুড়িগঙ্গা বোর্ডিং, শরীয়তপুর বোর্ডিং, ফরিদপুর মুসলিম হোটেল ও উজালা বোর্ডিংয়ের প্রতিটিতে রয়েছে ৩০ থেকে ৫০টির মতো কেবিন। প্রতিটি কেবিনে রয়েছে বিদ্যুতের ব্যবস্থা। আছে লাইট ও ফ্যান। রয়েছে রাত যাপনের মতো আনুষঙ্গিক বেডিংপত্র। এছাড়াও রয়েছে গোসলখানা ও বাথরুমের ব্যবস্থা। যদিও এগুলো এখন তেমন মানসম্মত নয়। তবুও এ ব্যবস্থাটুকুই এখানে রাত যাপনকারী শ্রমিকদের কাছে অনেক বড় পাওয়া। কথা হয় ফরিদপুর মুসলিম হোটেলে অবস্থানকারী সদরঘাট ফুটপাতের ফল বিক্রেতা মোহম্মদ মাহবুব মিয়ার সাথে। তিনি এ হোটেলে আছেন বিগত ছয়-সাত বছর, গ্রামের বাড়ি শরিয়ত পুরে। তিনি বলেন “আমি ঢাকাতে একাই থাকি, আমার পরিবার দেশে থাকে, ব্যাচেলর তাই এখানেই থাকি, বড় হোটেলে আড়াইশো তিনশো টাকা দিয়ে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব না।” তাই এখানে থাকার জন্য তাকে প্রতি রাতে দিতে হয় একশত টাকা।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ন শহরের মধ্যে অন্যতম। অল্প জায়গাতে গাদাগাদি করে থাকতে হলেও শ্রমজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং শহরের নতুন আগন্তুকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এসব হোটেল। এত অল্প টাকায় রাত্রি যাপনের আর ভালো কোন সুযোগ তাদের সামনে খোলা নেই।

আরবি.আরপি.২৬ এপ্রিল, ২০১৮