শিরোনাম :
দৃশ্যমান হয়েছে ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম
‘ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি এবং ২০২১ সালের মধ্যে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে’ বলে জানান ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ।
শনিবার (৪ আগস্ট) ঢাকা ক্রেডিটে ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসাপাতালের অগ্রগতি সম্পর্কিত আয়োজন সভায় প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ বলেন, ‘কালীগঞ্জের মঠবাড়ীতে ২২ বিঘা জমিতে হাসপাতাল নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। আমরা ইতিমধ্যে হাসাপাতালের সিইও নিয়োগ করেছি। সেখানে আজ সিইও’র প্রশাসিনক কাজ করার জন্য অফিস ভবন উদ্বোধন করেছি। স্কয়ার হাসপাতালের মতো বেশ কয়েকটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় অভিজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জন গমেজ ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতালের সিইও’র দায়িত্ব নিয়ে দ্রুততার সাথে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’
প্রেসিডেন্ট গমেজ জানান, হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে সম্পাদনের জন্য খ্রিষ্টান সমাজের ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, নার্সসহ নানা পর্যায়ের অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়। যারা বিভিন্ন সময়ে সভাতে মিলিত হয়ে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ঢাকা ক্রেডিটের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে নানাভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
এ সময় প্রেসিডেন্ট গমেজ বলেন, ‘আমাদের খ্রিষ্টান সমাজের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যসহ অনেক অবদান রয়েছে। হলি ফ্যামিলি রাষ্ট্রায়ত্ব হওয়ার পর স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের একটা শূণ্যতার সৃষ্টি হয়। কিন্তু সেই শূণ্যতা কাটিয়ে আধুনিক পরিসরে ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমাদের সমাজের ডাক্তারের ঘাড়তি রয়েছে, আমরা সেই ঘাড়তি পূরণ করতে চাই। আমরা হাসাপাতাল, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়েরও পরিকল্পনা করছি। ইতিমধ্যে তেজতুরীবাজারে নার্সিং কোর্সের জন্য অবকাঠামো তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।’
‘কালীগঞ্জের ৩০০ শষ্যা বিশিষ্ট ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হলে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমাদের সকল সদস্য স্বাস্থ্যবীমার আওতায় রয়েছে। এ ছাড়াও কালীগঞ্জের সমিতিগুলোতেও স্বাস্থ্যবীমা রয়েছে। স্বাস্থ্যবীমার আওতাভুক্ত সদস্যরা শুধু স্বাক্ষর করেই হাসপাতালের সেবা নিতে পারবে, এতে কোনো ঝক্কিঝামেলা নেই। হাসপাতালের প্রদেয় বিল শুধু সংশ্লিষ্ট সমিতিগুলো পরিশোধ করবে,’ বলেও জানান প্রেসিডেন্ট গমেজ।
এ সময় সিইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ও ফিলিপাইনের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত জন গমেজ বলেন, ‘আমার অনেক ইচ্ছে ছিলো, নিজের সমাজের কোনো হাসপাতাল নিয়ে কাজ করবো। আর এখন মনে হচ্ছে আমি আমার নিজের পরিবারের মধ্যে কাজ করছি। প্রাথমিকভাবে আমাদের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কাজটি খুব সুন্দরভাবেই শুরু হয়েছে। গাজীপুর জেলার সিভিল সার্জন, ডিসি ও প্রাক্তন এমপি তথা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে অনুমোদনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
মেজর জেনারেল জন গমেজ বলেন, ‘সাততলার ৩০০ শষ্যার হাসপাতালে আউটডোর, ইনডোর, প্যাথলজিসহ পুরো হাসপাতালের চাহিদা আমরা কয়েকটি হাসপাতাল নির্মান পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের আলোচনায় শেয়ার করেছি। আগামী অক্টোবরের মধ্যে তারা আমাদের প্রপোজাল দিবে এবং সবকিছু বিবেচনা করে নভেম্বর মাসেই আমরা হাসাপাতাল নির্মাণের পুরো কাজ শুরু করতে পারবো। আমরা আশা করি, ২০২১ সালের মধ্যে ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের জন্য মার্কেটিং একটি বড় বিষয়। এ কারণে আমাদের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে যেতে হবে। আমাদের নিজেদেরও প্রচার করতে হবে, তাহলে আমাদের হাসপাতাল ফেমাস হবে।’
‘আমরা ভারতের ‘ফাদার মুলার হাসপাতাল’ ও ব্যাংককের ‘সেন্ট লুইস হাসপাতাল’-এর সাথে একটি চুক্তি করতে যাচ্ছি, যার ফলে আমাদের হাসপাতালের সার্ভিস ফাইভ স্টার লেভেলের হবে।’ জানান অব: মেজর জন।
এ দিন আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, সেক্রেটারি জেনারেল হেমন্ত আই. কোড়াইয়া, ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিউবার্ট গমেজ, ঢাকার ক্রেডিটের আধ্যত্মিক উপদেষ্টা সিস্টার রেবা ভেরনিকা ডি’কস্তা আরএনডিএম।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, ‘আমাদের সমাজের ভাল ডাক্তার বের করতে সময় লাগবে। তবে হাসপাতালের সার্ভিস এবং ভাল ডাক্তার বের করতে খ্রিষ্টান সমাজের বাইরে থেকে ডাক্তার নেওয়ার প্রয়োজন হলে, তাদেরও সেই মতো অবহিত করা প্রয়োজন। ডিভাইন মার্সি মানে ঐশ করুনা, এই হাসপাতালের মাধ্যমে আমরা যেন ঈশ্বরের করুনা ছড়িয়ে দিতে পারি এবং এর সাক্ষ্য থাক যুগে যুগে সেজন্য আমাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে।’
‘অনেকে নেতিবাচক কথা বলবে, ভাল কাজ করতে গেলে এ রকম নেতিবাচক কথা শুনতে হবেই। কিন্তু এর পরও আমাদের কাজ করে যেতে হবে।’ বলেন বক্তারা।
এ দিন মুক্তালোচনায় উপস্থিত সুধীজনেরা বেশ কিছু প্রস্তাব রাখেন এবং প্রেসিডেন্ট গমেজ ও সিইও মেজর জেনারেল গমেজ তা সুন্দরভাবে আমলে নেন।
এ দিন আলোচনা শেষে ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার বিপুল লরেন্স গমেজ।
আলোচনা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা।
এ দিন আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সকল সদস্য এবং সমাজের বিশিষ্ট জনেরা॥
আরবি.আরপি. ৫ আগস্ট ২০১৮