ঢাকা ,
বার : বুধবার
তারিখ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ১০ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ঢাকা ক্রেডিট ডিসি চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টারের সোনামনিদের চিড়িয়াখানা পরিদর্শন

ডিসি চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টারের সোনামনিদের চিড়িয়াখানা পরিদর্শন

0
701

‘একদিন ছুটি হবে, অনেক দূরে যাবো, নীল আকাশে সবুজ ঘাসে খুশিতে হারাবো’ গানের সুরে ডিসি চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টারের সোনামনিরা জাতীয় চিড়িয়াখানা পরিদর্শনের উদ্দেশে ফিল্ড ট্রিপের বাসে যাত্রা শুরু করে।

সফরসঙ্গী হন তাদের অভিভাবক এবং ডিসি চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টারের শিক্ষকরা।

৩ নভেম্বর, প্রথমবারের মতো ডিসি চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টারের ফিল্ড ট্রিপে এই ভ্রমনের আয়োজন করা হয়। প্রাণিকুলের বাস্তব পরিচিতির জন্য এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার জন্য এই আয়োজন করা।

ভ্রমনকালে দেখা যায়, সোনামনিরা বিভিন্ন পশু-পাখি দেখে আনন্দে অত্মহারা। কখনো বানর, কখনো ঘোড়া আরাব কখনো হরিণের সামনে গিয়ে আনন্দে উদ্বেলিত। কখনো-বা সিংহের গর্জন শুনে চিৎকার করে মা-বাবাকে জড়িয়ে ধরে, আবার ঘোড়াকে হাত দিয়ে আদর করে অনুভূতি সঞ্চয় করছে।

সোনামিন জফিয়েল স্পর্শ’র মা ইরিন রোজারিও বলেন, ‘তার মেয়ে আগে পরিবারের সাথে চিড়িয়াখানায় এসেছিলো। কিন্তু এবার বন্ধু-বান্ধব ও শিক্ষকদের সাথে এটাই প্রথম। এটা তার জন্য অন্যরকম একটা অভিজ্ঞতা। এটা আমি ইতিবাচকভাবে দেখছি।’

তিনি জানান, ‘বাচ্চারা সবসময় ক্লাস আর বাসার মধ্যই সীমাবদ্ধ থাকে। এই রকম আয়োজনের মাধ্যমে তারা নতুন কিছু শিখতে পারছে। বড় বিষয় হলো তারা প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করতে পাছে। আমি এবং আমার স্বামী দু-জনই চাকরি করি, তাই তাদেরকে সময় দিতে পারি না। এই সুযোগে বাচ্চাকে নিয়ে ঘুরতে পারছি। এতে বাচ্চারা অনেক আনন্দিত।’

আরেক সোনামনি সাদ্বিত ইকবাল সূর্য’র বাবা সোহেল ইকবাল বলেন, ‘এই ধরনের আয়োজন বাচ্চাদের মধ্যে নতুন ধরনের উদ্যম তৈরি করে এবং সকলের সাথে ঘুরতে আসলে বাচ্চারা নতুন কিছু শিখতে পারে। তারা আগে এসেছে। কিন্তু সূর্যর মধ্যে আজকের মতো আনন্দ আগে দেখিনি।’

ডিসি চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টারের নার্সারীর ছাত্র রোয়াইফি জানায়, ‘আমি চিড়িয়াখানায় এসে অনেক আনন্দ করেছি, বানর দেখেছি, হাতি দেখেছি। আমার অনেক ভালো লেগেছে।’

প্রতিটি বাচ্চার মুখে ছিলো হাসিমাখা তাদের প্রতিদিনের নগর জীবনের বাহিরে গিয়ে বন্ধুদের সাথে মজা করা পশু পাখিদেখা এইটা ছিল মহামিলনের মতো। তারা পুরোটা সময়ই ছুটোছুটিতে ব্যস্ত ছিল, তাদের মধ্যে কোন ক্লান্তিবোধ ও জড়তা ছিল না।

ডিসি চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টারের প্রিন্সিপাল ডালিয়া রড্রিগস বলেন, ‘আমাদের ছেলে মেয়েরা সবসময় স্কুল বা ক্লাস রুমে পড়াশোনা করে। পরবর্তীতে তারা বাহিরের পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে না। রুম শিক্ষার পাশাপাশি বাস্তবক অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে। ক্লাসের পাশাপাশি ফিল্ড ট্রিপের মাধ্যমে তাদের হাতে কলমে শিক্ষার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।’

‘আমরা প্রতি মাসে থিম-বেইসড শিক্ষা দিয়ে থাকি। গত মাসের থিম ছিল এনিমেলস। যে কারণে চিড়িয়াখানায় ফিল্ড ট্রিপে যাওয়া। বর্তমানে বাচ্চাদের বাবা-মা চাকরির জন্য ছেলে-মেয়েদের সময় দিতে পারেন না। এর ফলে বাচ্চাদের প্রকৃতির সাথে বড় ধরনের ব্যবধান সৃষ্টি হচ্ছে। বাচ্চারা বই, ছবি এবং ভিডিওতে পশু-পাখি দেখে। কিন্তু তাদের গঠন, রং, আকার, চলাফেরার ধরন ইত্যাদি বিষয়ে ভালমতো বুঝতে পারে না। চিড়িয়াখানায় তারা এ সব বাস্তবে দেখে জ্ঞানলাভ করবে,’ বলেন প্রিন্সিপাল রড্রিগস।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বাচ্চাদের ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দিই না, তাদের ওপর সবকিছু ছেড়ে দেই। তাদের কোথায় ঘাটতি বা কোন বিষয়ে বুঝতে পারে না, শিক্ষকরা সেটা খুঁজে বের করেন এবং সেই জায়গায় বেশি গুরুত্ব দিয়ে তারেকে শিক্ষা দেওয়া হয়। আমারা ভবিষ্যতে চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টারের শিশুদের ঢাকার অন্যান্য জায়গায় এমনকি দেশের অন্যান্য স্থানে বা দেশের বাহিরে নিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা করছি।’

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সোনামনিরা জীবজন্তু দেখে হইহুল্লোর করে দুপুরে খাবার খেয়ে পুনরায় গন্তব্যের দিকে রওনা দেয়। ফেরার সময় ভ্রমনক্লান্তি শিশুদের চোখেমুখে দেখা যায় আত্মতৃপ্তির উৎফুল্লতা ॥

ডিসিনিউজ/আরবি.এসএমআর. ৪ নভেম্বর ২০১৮