শিরোনাম :
ঢাকা ক্রেডিট থেকে দ্রুত ও সহজে ঋণ পেতে করণীয়
মিতা পালমা:
ঢাকা ক্রেডিটের কোন সদস্য ঋণের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর তিন থেকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ঋণ পেতে পারেন। আর যদি সমিতির কোন সমস্যা থাকে, তাহলে বিলম্ব হয়। সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করে দিলে তখন তাকে দ্রুত ঋণ দেওয়া হয়।
দ্রুত ঋণ পেতে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। জানতে হবে ঋণনীতিমালা এবং ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে করণীয় কি কি। ঋণের আবেদন পত্রের সাথে সংযুক্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসমূহ হলো- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের হালনাগাদ ছবি, ঢাকা ক্রেডিটের দেওয়া ডিজিটাল আইডি কার্ডের ফটোকপি, চাকুরিজীবিদের ক্ষেত্রে বেতনের প্রত্যয়ন পত্র/ব্যাংক স্টেটমেন্ট, জাতীয় পরিচয় পত্র/জন্ম সনদ পত্রের ফটোকপি, ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আয়কর সার্টিফিকেট ও আয়কর রির্টান রশিদ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অঙ্গীকারনামা, স্বামীর ক্ষেত্রে স্ত্রী এবং স্ত্রী’র ক্ষেত্রে স্বামীর সম্মতিপত্রসহ আবেদনপত্রে যাদের আয় দেখানো হয় তাদের প্রত্যেকের সম্মতিপত্র, প্রয়োজনীয় জামিনের পরিমাণ ইত্যাদি।
আবেদনপত্রে যেসব সমস্যা পাওয়া যায়
যিনি ঋণের জন্য আবেদন করেন তার জামিনদার এবং জামিনদারের জামিনদার খেলাপী থাকে। নিজের ও পরিবারের সদ্যদের গৃহীত ঋণ খেলাপী থাকে। পূর্বের ঋণ খেলাপী থাকায় টপ-আপ এবং ৪০% বুক সিউরিটি ও এমআইসিআর চেকের নিয়মের মধ্যে পড়ে না। তথ্য গোপন করেন অনেক সদস্য। যেমন কেউ বেতন পান মাসে ২৮,০০০ টাকা তিনি উল্লেখ করেছেন, তিনি বেতন পান ৪০ হাজার টাকা। চাকুরীস্থল থেকে অফিসের বেতনের সনদ সাক্ষর ও সিলসহ আমাদের দেন কিন্তু আমাদের ইনভেষ্টিগেশন অফিসার গিয়ে দেখেন ঐ ব্যক্তি সেই অফিসেই নাই। অফিসের দারোয়ানের মাধ্যমে বা অন্য কোন মাধ্যমে জানা যায় তিনি অনেকদিন ধরে অফিসে আসেন না। অনেকে আয়ের প্রকৃত তথ্য না দিয়ে আয় বেশি দেখান। জীবন যাপনের জন্য যে খরচ হয় তার প্রকৃত খরচ না দেখিয়ে ঋণ প্রাপ্তির জন্য উদ্বৃত্ত আয় বেশি করে দেখান। অনেক খরচ যেমন বাচ্চাদের খেলনা কিনে দেওয়া, অতিথিদের বাসায় বেড়াতে যাওয়া, প্রসাধনী ক্রয়, পোশাক-পরিচ্ছদ ক্রয় ইত্যাদি ব্যয়ের ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয় না। এই সব কারণে পরবর্তীতে সদস্য ঋণ সঠিকভাবে দিতে পারেন না। বিবাহ সংক্রান্ত সমস্যা যেমন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ডির্ভোস কিংবা মিশ্রবিবাহ হয়ে থাকলে ঋণ আবেদনপত্রে তা তথ্য গোপন করেন। এই সমস্ত কারণে ঋণ আবেদনকারীদের ঋণ পেতে অনেকসময় হয়রানি বা বিলম্ব হয়।
আরো পড়ুন: আফ্রিকার উগান্ডায় ব্রাদার নিহত
অন্যান্য সমিতির তথ্য যাচাই করা হয়
একজন সদস্য ভাবতে পারেন, তিনি অন্যান্য সমবায় সমিতির তথ্য গোপন রাখবেন, আমরা তা ধরতে পারবো না। কিন্তু তিনি বুঝতে পারেন না, অন্যান্য সমিতির সাথে আমাদের যোগাযোগ আছে। কোন সদস্য অন্যান্য সমিতিতে তার ঋণ আছে কিনা বা তিনি সদস্য কিনা সেই তথ্য আমরা তার নাম, পিতার নাম ও স্থায়ী ঠিকানার সুত্র ধরে বের করে থাকি। ঋণ আবেদন করার সময় তারা সেগুলো ইচ্ছে করে গোপন রাখেন কিন্তু আমরা ধরে ফেললে তখন তারা আমাদের নিকট নত হন। অনেক সময় আমাদের সাথে ঝগড়া করেন।
ঋণ খেলাপিদের পড়তে হয় অসুবিধায়
যারা ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করেন না, ঋণ খেলাপি- তাদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। তারা বর্তমান শেয়ারের উপর ঋণ পান না। ঋণ কম পান। ঋণ খেলাপিদের বাসায় অফিস থেকে কর্মীরা যান, তাদের ঋণ পরিশোধের তাগাদা দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। রাস্তাঘাটে তাদের ঋণ লেখাপি হওয়ার কথা জামিনদাররা বলেন, কারণ জামিন দেওয়ার ফলে জামিনদারা ঋণ তুলতে পারেন না। ঋণ লেখাপিদের সামাজিকভাবে বদনাম হয়। কোন সদস্য ঋণ নিয়ে এক কিস্তি খেলাপি হলেও তাকে ডিফল্টার ধরা হয়। তিনি যদি পর পর তিনবার ঋণ পরিশোধ করেন তাহলে তার ডিফল্টারের বদনাম থাকে না। তাই আমার পরামর্শ যারা ঋণ নেন তারা যেন সামর্থের উপর ভিত্তি করে ঋণ নেন।
জামিনদারের দায়িত্ব
দেশে খ্রিষ্টানদের দ্বারা পরিচালিত সমবায় সমিতিগুলোতে শতকরা ২০ ভাগ সদস্য ঋণ লেখাপি। এক্ষেত্রে ঋণ লেখাপি রোধে একজন জামিনদার ভাল দায়িত্ব পালন করতে পারেন। যাদের জামিন দিবেন তারা যদি জেনে বুঝে জামিন দেন যে যিনি ঋণ নিচ্ছেন তার ঋণ পরিশোধের সামর্থ আছে তাহলে ঋণ লেখাপি রোধ করা সম্ভব। আমার পরামর্শ- অপরিচিত কাউকে জামিন না দেওয়া। দেখা গেল, ভাইয়ের বন্ধু অনুরোধ করলো জামিন দেওয়ার জন্য কিন্তু তার আয় সম্পর্কে না জেনে, তাকে জামিন দিলে নিজেই বিপদে পড়তে হয়।
মিতা পালমা, ইনচার্জ, এমআইএস, ঢাকা ক্রেডিট
অনুলিখন: সুমন কোড়াইয়া
আরো পড়ুন
শেরপুরে খ্রিষ্টান কিশোরীর ধর্ষণের মামলা তুলে নিতে জীবননাশের হুমকি
বিশ্বে যোগাযোগের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ভাল ইংরেজি জানা
ঢাকার ক্রেডিটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
খ্রিষ্টান সমাজের ৯ জনকে সম্মাননা দিল ঢাকা ক্রেডিট