শিরোনাম :
খাগড়াছড়িতে বন্যা পরবর্তী ভাঙ্গন ও ধ্বসে বেড়েছে ভোগান্তি
|| নীলাপদ চাকমা, খাগড়াছড়ি||
সারা দেশের ন্যায় খাগড়াছড়িতে টানা বৃষ্টিপাত আর ভারী বর্ষণে বন্যার পানি কমলেও যেন রেহাই নেই বন্যা দুর্গতদের। খরস্রোতা চেঙ্গী, মাঈনী ও ফেনী নদীর পানি কমে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙ্গন ও ধ্বস।
ইতিমধ্যে চেঙ্গী নদীর পাড়বর্তী গঞ্জপাড়া, বটতলী, শান্তিনগর, শব্দমিয়াপাড়া, উত্তর খবং পড়িয়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভেঙ্গে গেছে নদীর পাড়। বিলীন হচ্ছে স্থানীয়দের একমাত্র অবলম্বন ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি।
খাগড়াছড়ি জেলা শহরের আদিবাসী অধ্যুষিত মধুপুর বাজারে ৯টি দৌকানসহ চলাচলের গ্রামীণ যোগাযোগ ভেঙ্গে পড়েছে। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কের পার্শবর্তী মহাসড়কের পাশে ভাঙ্গনের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থাও রয়েছে বিপদজনক। তবে এ সকল স্থানে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানা যায়।
চেঙ্গী, মাঈনী ও ফেনী নদীর বন্যার পানি কমলেও এখনো স্বাভাবিক হয়নি জনজীবন। গ্রামীণ সড়কে ভোগান্তি, ভাঙ্গনে এলোমেলো ঘর গোছাতে ব্যস্ত ভারী বর্ষণের প্লাবিত এলাকার মানুষগুলো। গত কয়েকদিনে দিঘীনালা উপজেলার মাঈনী, রামগড় উপজেলার ফেনী, পানছড়ি ও খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে জেলাজুড়ে উৎপাদনের লক্ষ নিয়ে নির্মিত বীজিতলায় রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে পানছড়ি উপজেলার দুধুকছড়া ফুটব্রীজ ভেঙ্গে গেছে, নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে পানছড়ি উপজেলার চেঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়। বন্ধ হয়েছে উপজেলার মুনিপুর-তারাবন সড়ক যোগাযোগ, যে রাস্তা দিয়ে তারাবনছড়ার বেথলেহেম চার্চ ও কিনামনিপাড়া চার্চে খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বীরা চার্চে উপাসনা করতো। এভাবে প্রায় পানছড়িতে ১১টি বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও হুমকিতে রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা, অফিস, বসতবাড়ি ও ফসলি জমি।
দিঘীনালা উপজেলার মাঈনী নদীর ভাঙ্গনে চৌংড়াছড়ি, মেরুং, বোয়ালখালী, হাসিনশনপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাহাড়ের বিভিন্ন ছোট-বড় ছড়া ও খালের ভাঙ্গনও দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর দাবী ভয়াবহ এ ভাঙ্গন ও ধ্বস নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মর্তুজ আলী জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে খাগড়াছড়িতে ১৪৩ হেক্টর রোপা আমন নিমজ্জিত হয়েছে। তবে সর্বমোট কি পরিমাণ জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা নিরুপণে কাজ চলছে বলে তিনি জানান।
এদিকে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে যে সব সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা মেরামতসহ যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়ক ও জনপদ বিভাগ দ্রুততম সময়ের মধ্যে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।