শিরোনাম :
ছিনতাই করতে ব্যর্থ হয়ে খ্রিষ্টান নারীকে ছেলেধরা গুজবে মারধর
ডিসি নিউজ:
ছিনতায় করতে ব্যর্থ হয়ে খ্রিষ্টান নারী নমিতা পেরেরাকে ছেলেধরা গুজবে মারধর করে আহত করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল ময়মনসিংহ কাথলিক ধর্মপ্রদেশের বিরইডাকুনি ধর্মপল্লীর মুজাখালী গ্রামে। তিনি হালুয়াঘাটে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
বিরইডাকুনি গির্জার পাল-পুরোহিত ফাদার ফিডেলিউস নেংমিনজা ডিসিনিউজকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ছিনতাইয়ে ব্যর্থ হয়ে ছেলেধরা গুজবকে ব্যবহার করে আমার ধর্মপল্লীর একজন খ্রিষ্টভক্তকে মারধর করা হয়। তার নিকট দুই হাজার টাকা ছিল। দুইজন মুসলিম নারী জোর করে তার নিকট হতে টাকা ছিনতাই করার চেষ্টা করেন, তাদের সাথে দুইজন পুরুষও ছিলেন। নমিতার নিকট হতে টাকা পেতে ব্যর্থ হলে তারা ছেলেধরা বলে চিৎকার চেচামেচি করে। ঘটনা ঘটার সময় একজন ভাল মানুষ ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে ডাকেন। পুলিশ এলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।’
ফাদার ফিডেলিউস এই ঘটনায় যারা জড়িত সেসব দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
আরো পড়ুন: সমবায় আন্দোলনে ঢাকা ক্রেডিট অগ্রপথিক: দুদকের মহাপরিচালক
হালুয়াঘাট থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস ডিসি নিউজকে বলেন, ‘খ্রিষ্টান নারীর উপর হামলার ঘটনায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুইজন নারীকে আমরা গ্রেফতার করেছি। অজ্ঞাতনামা আরো দুইজনের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে।’
জানা গেছে, হামলার শিকার বাঙালি নারীর নাম নমিতা পেরেরা। তাঁর স্বামী একজন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী গারো সম্প্রদায়ের লালন তজু। নমিতা গতকাল বিকেলে হাসীদের মোড়ে চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন। তখন টাকা ছিনতায়ের চেষ্টা করেন দুইজন মহিলা। টাকা ছিনতায়ে ব্যর্থ হলে তাকে ছেলেধরা রূপ দিতে চেষ্টা করেন। তারা ছেলেধরা বলে নমিতাকে পেটাতে শুরু করেন।
নমিতা তার উপর হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
হালুয়াঘাট থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, বাকি যে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়নি, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিনে ছেলেধরা গুজবে কমপক্ষে নয়জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। নিহত ও হামলা শিকার কেউই ছেলেধরা ছিলেন না। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুষ্কৃতিকারীরা ছেলেধরার গুজব ছড়িয়ে অসহায় মানুষদের মারধর করছে।
আরো পড়ুন: গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান এমপি জুয়েল আরেংয়ের
সচেতনতা সৃষ্টিতে ইতিমধ্যে পুলিশ মাঠে নেমেছে।
পদ্মাসেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগছে এমন গুজব সৃষ্টি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে সেতুকতৃপক্ষ বলছে, সেতু তৈরি করতে কখনো মাথা লাগে না। এটা একটা গুজব।
কোনো কোনো জায়গায় পুলিশকে মাইকিং করে ছেলেধরা গুজবকে পাত্তা না দিয়ে বরং কোথাও গণপিটানোর ঘটনা ঘটলে ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে জানানোর আহ্বান জানাচ্ছেন। আইন হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য সচেতন করছেন বিশিষ্ট জনেরা।
এসসি/আরসি/০৭/২০১৯
আরো পড়ুন:
ঘরে বসে অনলাইনে আয় করছেন খ্রীষ্টিনা
বিদেশে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা চলে গেলে সমাজ একসময় মেধাশূন্যতায় ভুগবে: পংকজ গিলবার্ট কস্তা