ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা Uncategorized ‘সাংস্কৃতিক চর্চাই পারে মানুষকে সুস্থ-স্বাভাবিক রাখতে’

‘সাংস্কৃতিক চর্চাই পারে মানুষকে সুস্থ-স্বাভাবিক রাখতে’

0
538
‘সাংস্কৃতিক চর্চাই পারে মানুষকে সুস্থ-স্বাভাবিক রাখতে’

রাফায়েল পালমা, ঢাকা:
অনুষ্ঠিত হয়ে গেল কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘আবৃত্তি পরম্পরা’। আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন দেশের বরেণ্য ও স্বনামধন্য আবৃত্তিশিল্পী তিতাস রোজারিও, রাশেদ হাসান ও রানা আহমেদ।
২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার কথা আবৃত্তি চর্চাকেন্দ্রের আয়োজনে ঢাকার শাহবাগে পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে শতাধিক দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতিতে এই কবিতা আবৃত্তির আয়োজন করা হয়।
আবৃত্তি আয়োজনের প্রারম্ভেই কথা’র সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম নাজক, সভাপতি ড. ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও আবৃত্তি সমন্বয় পরিবারের সাধারণ সম্পাদক আহকুমুল্লাহ আমন কথা’র উদ্যোগ গ্রহণ ও এগিয়ে চলার ইতিবৃত্ত উপস্থাপন করেন। পর্যায়ক্রমে তিনজন আবৃত্তিকারের সংক্ষিপ্ত পরিচয় উপস্থাপন করা হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হওয়ার অনুষ্ঠানটি প্রায় দুই ঘন্টা চলে। একেকজন আবৃত্তিশিল্পীর ১০-১২টা কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে সমাজের নানা সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, সরলতা-জটিলতা, হিংসা-বিদ্বেষ, চ্যালেঞ্জ, ক্ষোভ-ক্রোধ, অন্যায়-স্বার্থপরতা, যুদ্ধ-স্বাধীনতা, ধর্ম, নৈতিকতা, প্রেম-ভালবাসা ও হৃদয়ের অনুভূতির কথা উপস্থাপন করেন।
কবিতার বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে ব্যকগ্রাউন্ড মিউজিকের উপস্থাপন ও আবৃত্তিকারের স্বরের ওঠানামার মধ্যে ছিল এক মহাঐকতান। একই মঞ্চে আলো-আঁধারের মাঝে প্রতিজন আবৃত্তিকারের জন্য ছিল আলাদা আলাদাভাবে আবৃত্তির ব্যবস্থা। মিলনায়তনে শতাধিক দর্শক-শ্রোতার নিঃশব্দ অবস্থানসহ তাদের মুগ্ধতা কবিতা আবৃত্তির আসরকে করেছে মহিমান্বিত ও অর্থপূর্ণ।‘সাংস্কৃতিক চর্চাই পারে মানুষকে সুস্থ-স্বাভাবিক রাখতে’
চট্টগ্রামে জন্ম নেওয়া রাশেদ হাসান বিদ্যায়তনিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনার  স্নাতকোত্তর। পেশায় বর্তমানে ছোটদের সাংস্কৃতিক জগৎ ‘ফুলকি’র প্রশিক্ষণ পরামর্শক। আবৃত্তিকলা তাঁর একমাত্র সাংস্কৃতিক পেশা। তিনি যে সকল কবিতা আবৃত্তি করেন তার মধ্যে ছিল: রবীন্দ্রনাথের সন্ধ্যা ও প্রভাত, ইব্রাহিম আজাদের উৎসর্গ, নির্মলেন্দু গুণের কিছুই সহজ নহে, শাহিদ আনোয়ারের ধাত্রী, শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের যখন বৃষ্টি নামল, আনিসুল হকের মানুষ জাগবে ফের ইত্যাদি।
ঢাকা ক্রেডিটের প্রয়াত ডাইরেক্টর আলেকজান্ডার রোজারিও ও বর্তমান উপদেষ্টা হেলেন রোজারিও’র কনিষ্ঠ পুত্র তিতাস রোজারিও ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বেড়ে ওঠেন। স্কুলের গন্ডি পার হবার আগেই পা রেখেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় আবৃত্তির জন্য। ১৯৯০ সালে অংশ নিয়েছিলেন কথা’র দশম কর্মশালায়। ২০ বছরেরও অধিক তিনি নটর ডেম কলেজে পদার্থ বিজ্ঞানে অধ্যাপনা করছেন। অনুষ্ঠানে তাঁর আবৃত্তি করা কবিতাগুলোর মধ্যে ছিল: রবীন্দ্রনাথের গীতবিতান, জীবনান্দ দাশের মনে হয় একদিন, কামরুজামান ভূঁইয়ার শান্তি এবং ভালবাসা, হুমায়ূন আহমেদের গৃহত্যাগী জোছনা, খোন্দকার আশরাফ হোসেনের হোরেশিওর প্রতি হ্যামলেট, সলিল চৌধুরীরর চাবি, তারাপদ রায়ের জানুয়ারি ১৯৭২ ইত্যাদি।
১৯৮১ সালে টাঙ্গাইলে জন্ম নেওয়া রানা আহমেদ ১৯৯৯ সালে টাঙ্গাইল আবৃত্তি সংসদে আবৃত্তি চর্চা শুরু করেন। ২০০৬-এ কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের কর্মশালার মাধ্যমে ঢাকায় তাঁর আবৃত্তি চর্চা শুরু। গুরু ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াতলে চলেছে প্রাতিষ্ঠানিক আবৃত্তির পাঠ। রানা আহমেদ যেসব কবিতা আবৃত্তি করেছেন তার মধ্যে ছিল: শুভ দাশগুপ্তের আমরা, শঙ্খ ঘোষের বলো তারে শান্তি, জন মহম্মদের (অনুবাদ) কোনো এক মায়ের জন্য বৃষ্টি, নওশাদ জামিলের নুসরাত, মাসুম রেজার কিশোরী ফিরে যাও, লতিফুল ইসলাম শিবলীর প্যারিসের চিঠি ইত্যাদি।
তিনজন আবৃত্তিকারের সবাই বাংলাদেশ বেতার, বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও নামিদামি অনুষ্ঠানে নিয়মিত কবিতা আবৃত্তি করে থাকেন।
অনুষ্ঠানের শেষে একজন শ্রোতা জুঁই বি কস্তা ডিসিনিউজকে বলেন, ‘তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি যেভাবে ব্যক্তি-সমাজ-দেশকে ও দেশের মানুষকে নিষ্ক্রয়-প্রাণহীন করে তুলেছে, এর মধ্যে সাংস্কৃতিক চর্চাই পারে মানুষকে সুস্থ-স¦াভাবিক রাখতে। আর এ সময়ে এ ধরনের অনুষ্ঠানে এতো মানুষ হয় এ দেখে আমি মুগ্ধ। তাই বলবো কথা’র আয়োজন সাার্থক হয়েছে।’
উল্লেখ্য যে, ১৯৮৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ‘কথা’ সমাজের সৌন্দর্য ও সৌকর্যকে বৃদ্ধির প্রত্যয়ে পথ চলা শুরু করেছিল, যা আজ সৌন্দর্যপ্রেমীদের মহীরূহ। সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার বার্তা নিয়ে এগিয়ে চলেছে ৩৫ বছর ধরে॥

আরো পড়ুন:

ছিনতাই করতে ব্যর্থ হয়ে খ্রিষ্টান নারীকে ছেলেধরা গুজবে মারধর

সমবায় আন্দোলনে ঢাকা ক্রেডিট অগ্রপথিক: দুদকের মহাপরিচালক

বন্যায় দুর্গতদের সাহায্য করছে কারিতাস