শিরোনাম :
আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের অনুরোধ
হিমেল রোজারিও:
বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন কেন্দ্রীয় সংসদের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে জগন্নাথ হলের উপাসনালয়ে আদিবাসী দিবস পালিত হয়েছে।
৯ আগস্ট সকাল ১০ টায় কেন্দ্রীর শহীদ মিনারের সামনে বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বেলুন উড়িয়ে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণার পরে ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে আদিবাসী ভাই-বোনেরা র্যালীর মাধ্যমে জগন্নাথ হলের উপাসনালয়ে প্রবেশ করেন। সেখানে বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের (বাগাছাস) কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি লিংকন দিব্রা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘পৃথিবীর প্রায় ৯০টি দেশে আজ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হচ্ছে। আমরা মনে করি বর্তমান সরকার আদিবাসী বান্ধব সরকার, বাংলাদেশের আদিবাসী হিসেবে আমাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের অনুরোধ করি।
সভাপতি লিংকন আশা করেন ভবিষ্যতে ৯ আগস্ট দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে আদিবাসী দিবসটি বাংলাদেশের পালিত হবে।
যারা ২৫ বছর ধরে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করে আসছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উদ্বোধক বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘আদিবাসীরা এই দিবস উদযাপনের মধ্যদিয়ে নিজেদের জাতির আত্মপরিচয় তুলে ধরেছে। প্রত্যেক জাতির একটি নিজস্ব সত্তা রয়েছে, আদিবাসীরা যেন এই সত্তাকে ধরে রাখতে পারে। মর্যদার সহিত জাতি সত্তাকে টিকিয়ে রাখতে হলে সংগ্রাম ও আন্দোলন করতে হয়।
সেলিনা হোসেন ২১শে বই মেলায় আদিবাসীদের জন্য আলাদা স্টল প্রদানের জন্য বাংলা একাডেমির কাছে আবেদন করেছেন যেন আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি-সাহিত্যকে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে পারেন। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ রাখেন তিনি যেন আদিবাসী ভাষা সংরক্ষণে সাহায্যে করেন।
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও জগন্নাথ হলের উপাসনালয়ে জাতিসংঘকে দুটি দশককে আদিবাসী দশক হিসেবে ঘোষণা করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ প্রদান করে বলেন, বাংলাদেশের আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। এই স্বীকৃতি পেলে আদিবাসীরা আরো উন্নতি করতে পারবে। সমতলের আদিবাসীদের জন্য আলাদা মন্ত্রনালয় প্রয়োজন এবং ভূমি অফিস প্রয়োজন।
তিনি আদিবাসী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ৫% যে সরকারি কোঠা রয়েছে সেগুলো বহাল রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলা ভাষার প্রতি যদি কারো ভালোবাসা থাকে, তাহলে প্রতিটি ভাষার প্রতি ভাষাকে তার সম্মান জানানো উচিত।
কারিতাস সিডিআই এর পরিচালক, গবেষক ও লেখক থিওফিল নিশারণ নকরেক ডিসিনিউজকে জানান, জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত বিশ^ আদিবাসী দিবস অর্থপূর্ণভাবে আমরা পালন করে থাকি, আজও তার ব্যতিক্রম নয়। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের মূলসুর হচ্ছে ‘আদিবাসী ভাষা চর্চা ও সংরক্ষণ’। আমরা সর্বদা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছি। আশা করি সরকার আমাদের সাহায্যে করবে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনা শেখ হাসিনা বিশ^বিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকউল্লাহ খান, বৌদ্ধ ধর্ম কল্যাণ ট্রাষ্ট্রের সচিব জয় দত্ত বড়–য়া, সাংবাদিক নিখিল মানখিনসহ আরো অনেকে।