শিরোনাম :
খ্রিষ্টান মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার ১৫ আগস্টের স্মৃতিচারণ
আমি মুক্তিযোদ্ধা জোনাস গমেজ। আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি জাতির পিতার অনুপ্রেরণায়। তিনি ১৯৭১ সনের ৭ই মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, ‘যার যা কিছু আছে, তা নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।’ সেটাই আমরা মনে গেঁথে গিয়েছিল। ১৯৭১ সনে আমি তাঁর এই কথা শুনেই আমার দেশকে, দেশের মানুষকে রক্ষা করতে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি।
আমি বলতে চাই, ১৫ আগস্ট জাতির জন্য, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য, দেশের জন্য খুবই একটা দুঃখজনক ঘটনা। তাঁকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে, যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই। তাদের সবাইকে আল্লাহ, ঈশ্বর যেন স্বর্গবাসী করেন এই প্রার্থনা করি।
জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। জাতির পিতার জন্য আমরা এত সুন্দর একটা দেশ পেয়েছি। বর্তমান সরকারের নিকট মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার চাওয়া, তাঁর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
১৫ আগস্ট দুপুরের ঘটনা। আমি যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর খবর দুপুরের পর শুনেছি, তখন মনে হয়েছে, যদি আমার বাবার মৃত্যু হতো, তাহলেও আমার এত দুঃখ হতো না। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে এত কষ্ট পেয়েছি যে, আমি নিজেও বিশ্বাস করতে পারিনি।
বঙ্গবন্ধু এখনো আমাদের মাঝে জীবিত আছেন। তাঁর কাজ যদি আমরা করে যেতে না পারি, তাহলে তাঁর আত্মা শান্তি পাবে না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট অনুরোধ, বঙ্গন্ধুর যে স্বপ্ন ও আশা ছিল, আমরা যেন সেগুলো পূরণ করতে পারি।
যুদ্ধের চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছি: বীরাঙ্গনা স্বর্ণলতা
আমি যখন শুনেছি, বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে, তখন যুদ্ধের সময় যে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম, কষ্ট পেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম। তাঁর হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে সেই বাসাবো থেকে ছুটে গিয়েছি বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটির নিকট। তবে সেখানে যেতে পারলাম না। আমাকে থামিয়ে দিয়েছিল নিরাপত্তাকর্মীরা। আমি আমার বাবারে আর দেখতে পারলাম না। বঙ্গবন্ধুকে আমি বাবা বলে ডাকতাম। তাঁকে আর দেখতে পারলাম না। তিনি আমাকে আদর করে ‘পাগলী’ বলে ডাকতেন।
অনুলিখন: সুমন কোড়াইয়া
আরো পড়ুন:
সংবর্ধিত হলেন বীরাঙ্গনা কানন গমেজ ও স্বর্ণলতা ফলিয়া