শিরোনাম :
সমবায়ে প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্বাচন ও বার্ষিক সাধারণ সভা বাতিলের আবেদন গ্লোরিয়া ঝর্ণার
ডিসি নিউজ:
মহান জাতীয় সংসদে সমবায় সমিতিগুলোতে প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্বাচন ও বার্ষিক সাধারণ সভা বাতিলের আবেদন জানান খ্রিষ্টান সমাজের একমাত্র নারী সাংসদ অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার।
গতকাল স্পীকার শিরীন শারমিনের আহ্বানে দুই মিনিটের বক্তব্যে সংরক্ষিত নারী আসন ৩০-এর সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া বলেন, ‘আমার বিষয় সমবায় সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সদস্যদের সরাসরি অংশগ্রহণের ব্যবস্থাকরণ প্রসঙ্গে। বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে মালিকানার নীতির কথা বলা হয়েছে। মূলত সংবিধানে রাষ্ট্রীয় মালিকানা, সমবায় মালিকানা ও ব্যক্তিগত মালিকানার কথা বলা হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচনের চাবিকাঠি হিসেবে সমবায়কে গুরুত্ব দিয়ে সংবিধানে সমবায় মালিকানা স্থান দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের সমবায় সমিতি আইন ২০০১ সংশোধনী ২০১৩ ও সমবায় সমিতির বিধিমালা ২০০৪-এ অনেক অসঙ্গতি রয়েছে, যা সমবায় সমিতির সাধারণ সদস্যদের কল্যাণের জন্য দূর করা প্রয়োজন। মাননীয় মন্ত্রীর সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সমবায় সমিতির বিধিমালা ২০১৪-এর ২১ ধারায় রয়েছে, যে সকল সমবায় সমিতির ৩ হাজার বা তার থেকে অধিক সদস্য রয়েছে, সে সকল সমবায় সমিতির নির্বাচন ও বার্ষিক সাধারণ সভা আবশ্যিকভাবে প্রতিনিধির মাধ্যমে করতে হবে। প্রতিনিধি নির্বাচনে সুষ্পষ্ট কোনো নির্দেশনা এই বিধিতে নাই। প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্বাচন ও সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হলে সমবায় সমিতির নেতৃত্ব কুক্ষিগত ও দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এই ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সমবায় নীতিমালার অন্যতম নীতি সদস্যদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এই গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন এবং জনস্বার্থ বিরোধী। এই ব্যবস্থা সমবায় আন্দোলন বিকশিত হওয়ার অন্তরায় স্বরূপ। সুতরাং সমবায় সমিতির নির্বাচন ও সাধারণ সভার সকল সদস্যের সরাসরি অংশগ্রহণে হওয়া আবশ্যক। এতে সাধারণ সদস্যদের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ স্বতফূর্ত অংশগ্রহণ ও উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাবে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়ার বক্তব্যের সমর্থন ও প্রশংসা করেছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে হিউবার্ট পিউরীফিকেশন ফেসবুকে লিখেন, ‘খুব ভালো ব্যাখা। মাত্র সিন্ডিকেট নয়, সকলের ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে।’
সুজিত হালদার লিখেন, ‘ধন্যবাদ দিদি। জনগণের মনের কথাগুলো অকপটে বলেছেন। আশা করি সমবায় জগতে আবারও গণতন্ত্র ফিরে আসবে।’
প্রসঙ্গত, ২ আগস্ট হাউজিং সোসাইটির ৩২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘একদিকে ভাল লাগছে স্বল্প পরিসরে এসি রুমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করছি, আবার ভারাক্রান্ত লাগছে বিশাল আয়োজনের এজিএম আজ একটি স্বল্প পরিসরে হচ্ছে। আমাদের পূর্ববর্তী বক্তাগণ ও সম্মানিত চেয়ারম্যান বলেছেন, প্রতিনিধির যে ২১ বিধি তা পরিবর্তনের। ২০১৩ সনের সংশোধিত যে সমবায় আইন, তার ১৭ এর ৫ ধারায় রয়েছে মোট সদস্যের ২০% হলে কোরাম হবে। কিন্তু ২১ উপবিধিতে যে প্রতিনিধির কথা বলা হয়েছে, সেখানে কোরামের কোনো বিষয় নাই। যেহেতু আজকের এজিএমএ আমাদের দু’জন সমবায়ের অভিভাবক উপস্থিত রয়েছেন- সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এবং নিবন্ধক জনাব আমিনুল ইসলাম, আপানাদের সবিনয় অনুরোধ করবো, আইনের সাথে যে সাংঘর্ষিক এই বিধি, এটি যেন তাড়াতাড়ি রহিত করা হয়, যেন আমরা ঢাকা ক্রেডিট, হাউজিং সোসাইটি এবং অন্যান্য যাদের সদস্য ৩ হাজারের ওপরে। আমরা সকল সমিতির এজিএম এবং নির্বাচন যেন উৎসবমূখর পরিবেশে সকলের অংশগ্রহণে করতে পারে সেই ব্যবস্থা করার জন্য।’
আরো পড়ুন:
কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও’র বিশপীয় অভিষেক আজ