শিরোনাম :
কাপ্তাইয়ে চিৎমরমে মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসবে জলকেলি
মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম সামাজিক উৎসবের আরেকটির নাম সাংগ্রাই। সাধারণত মঘিসনের চন্দ্রমাস অনুসারে এ দিনটি মারমারা পালন করে থাকে।
এটি বছরের শেষ দুইদিন ও নববর্ষের প্রথমদিন পালন করে ফারাং রিলংপোয়েহ অর্থাৎ ভগবান বুদ্ধের স্নানোৎসব । এ দিনে নারী-পুরুষ সকলে মিলে বৌদ্ধ মূর্তি গুলোকে নদীর ঘাটে নিয়ে যায় । তারপরের দিনগুলোতে শুরু হয় মারমা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান রিলংপোয়ে অর্থাৎ জলকেলি উৎসব । এ খেলায় এক জায়গায় পানি ভর্তি করে জমা রাখে তারপর যুবক-যুবতীরা একে অপরের দিকে পানি ছুঁড়ে মারে । তারা একে অপরকে ভালবাসার স্নিগ্ধতায় ভিজিয়ে দেয় । এই জলকেলি খেলায় পরস্পরকে ভিজিয়ে দিয়ে বিগত বছরের সকল দু:খ, কষ্ট, জরা-ব্যাধি দুর হয়ে যায় বলে তারা মনে করে থাকে । এছাড়াও এ দিনে বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে ধর্মীয় বাণী শ্রবণ করে।
১৫ এপ্রিল, সকাল ১১ টায় মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসবটি প্রাণবন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে কাপ্তাই উপজেলাস্থ চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার মাঠ প্রাঙ্গণে জলকেলি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সাংগ্রাই উৎসবের জলকেলি অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য প্রকৌশলী থোয়াইচিং মং মারমা, গেষ্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, বাবু অংসুইছাইন চৌধুরী, উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক এবং ৩নং চিৎমরম ইউপি চেয়ারম্যান খাইসাঅং মারমা, বিশেষ অতিথি কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব তারিকুল আলম, কাপ্তাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, বাবু সুব্রত বিকাশ তংঞ্চঙ্গ্যা, কাপ্তাই থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) জনাব নুরুল আলম, ৩২৩নং চিৎমরম মৌজার হেডম্যান বাবু ক্যওসিংমং মারমা, কাপ্তাই ওয়াগ্গা ছড়া জোনের ১৯ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শহীদুল ইসলাম, ১নং চন্দ্রঘোনা ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান, বাবু বিপ্লব মারমা, সরকারী বেসরকারি পদস্থ কর্মকর্তা, সাংবাদিকবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধিবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন ।
আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উৎসব উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ক্যজহ্লা মারমা । এই উৎসবকে ঘিরে ১৩ এপ্রিল হতে চিৎমরম বৌদ্ধ মন্দির প্রাঙ্গণ জুড়ে বসেছে লোকজ মেলা । লোকজ মেলায় ব্যবসায়ীরা হরেক রকম পসরা সাজিয়ে বসেছে । জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমনে উৎসবটি মুখরিত হয়ে ওঠে । এই অনুষ্ঠানে কাপ্তাই উপজেলা ছাড়াও তিন পার্বত্য জেলা হতে এবং সমতল অঞ্চলের লোকজনেরাও মেলায় অংশগ্রহণ করেছে ।
মারমাদের ঐতিহ্যবাহী পোষাকে সজ্জিত হয়ে মারমা শিশু, কিশোর, তরুন-তরুনীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী মারমা নৃত্য ও গান ছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ের নৃত্যও পরিবেশিত হয় ।
আরবি.আরপি.১৯ এপ্রিল, ২০১৮