শিরোনাম :
|| সুমন কোড়াইয়া ||
হলি হ্যাভেন চার্চ অব দ্যা ন্যাজ্যারীণের সদস্য খ্রীষ্টিনা তিথি। বাসা ঢাকার উত্তরায়। ঘরে বসে অনলাইনে আয় করছেন তিনি। চলুন শোনা যাক তাঁর অনলাইন ব্যবসায় সফল হওয়ার গল্প:
‘আগে চাকরি করতাম। আামার ডেলিভারি হওয়ার কারণে চাকরিটা ছেড়ে দিতে হয়েছে। বাসায় শিশু রাখার মানুষ ছিল না। মেয়ের বয়স যখন ছয় মাস, তখন চিন্তা করলাম কিছু একটা করা দরকার। কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তখন আমার জা আমাকে অনলাইনে ব্যবসা করার পরামর্শ দিলেন। প্রথমে বোঝার চেষ্টা করলাম অনলাইনে ব্যবসা আসলে কী।
আরো পড়ুন: আইটি পেশাজীবীদের নিয়ে ঢাকা ক্রেডিটের মতবিনিময়
এই বিষয়টি জানার পর ফেসবুকে একটা পেইজ খুললাম। পেইজের নাম ঐন্দ্রী অনলাইন শপ। ফেসবুক পেইজটাই আমার ব্যবসার মূল চালিকা শক্তি। আমি আমার জায়ের পরামর্শে প্রথম আটটি জুয়েলারী পণ্য ফেসবুক পেইজে আপলোড করলাম। এক সপ্তাহের মধ্যে সাড়া পেলাম। আমার পণ্য বিক্রি হতে শুরু করলো। প্রথম দিকে আমার স্বামী পণ্যগুলো ঢাকার মধ্যে বিতরণ করতেন। পর্যায়ক্রমে পাঠাও সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য পাঠাই। পাঠাও প্রতি ৫০০ গ্রাম পণ্যের জন্য ঢাকার মধ্যে ৬০-৮০ টাকা নিয়ে থাকে। যিনি পণ্য অর্ডার দেন তিনি ডেলিভারি চার্জ দেন।
এখন ঐন্দ্রী অনলাইন শপ পেইজে ফলোয়ার রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার। আমার বেশির ভাগ পণ্যের অর্ডার আসে ঢাকার বাইরে থেকে।
অনলাইন ব্যবসার বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিশ্বাস অর্জন করা। কারণ, এখন অনলাইনে অনেক ভুয়া পেইজ রয়েছে। অনেক ক্রেতা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তাই কোনো ক্রেতা পণ্য পছন্দ করলেও পণ্য কিনতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। প্রথমে তাদের আস্থা জয় করা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করার চেষ্টা করি, ফলে একই ক্রেতা আমার পণ্য আবারও কিনেন। ক্রেতাদের সাথে সুন্দরভাবে যোগাযোগ করা, প্রশ্ন করলে সাথে সাথে উত্তর দেওয়া এবং পণ্যের মান ঠিক রাখার মাধ্যমে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করি। আমি চেষ্টা করি পণ্যের গুণগত মান ঠিক রাখতে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে অধিক পণ্য বিক্রি করতে।
আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যারা অনলাইনে একটু সময় দিতে পারবেন, প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি থাকে, তাহলে এই ব্যবসায় অবশ্যই ভাল করা সম্ভব। ভাল আয় করা সম্ভব। আমি নিজেও এখন ভাল আয় করছি, ঘর সংসার, সন্তান সামলে।
আমার পণ্যের বিশেষত্ব হলো আমি কিছু পণ্য নিজের হাতে তৈরি করি। হাতে তৈরি গয়নাগুলোর চাহিদা বেশি। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ কিনে অনলাইনে ছবি আপলোড দিই।
আরো পড়ুন: বিদেশে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা চলে গেলে সমাজ একসময় মেধাশূন্যতায় ভুগবে: পংকজ গিলবার্ট কস্তা
ঘরের কাজের পাশাপাশি আমি অনলাইন ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। ভাল সময় কাটে। প্রাথমিক যোগাযোগ করি ফেইসবুক ম্যসেঞ্জারের মাধ্যমে। পরে পণ্য ডেলিভারির সময় মোবাইলে যোগাযোগ করি।
পণ্যের মডেল আমি নিজেই হই। গয়না, শাড়ি পরে ফটোশ্যুট করি। আমার স্বামীকে বলে রাখি ছবি তুলতে সাহায্য করতে, তিনি আমার ছবি তুলে দেন।
আমার অনলাইনে বেশি চলে মালা, দুল, ব্রেসলেট, থ্রি পিচ, সালোয়ার কামিজ, শাড়ি, ব্লাউজ ইত্যাদি।
আমি মনে করি যারা বেকার, বিশেষ করে গৃহিনীরা, যারা আয় করতে চান, তাঁরা স্বল্প পুঁজি নিয়ে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অনলাইনে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েও ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
পরিশেষ ঐন্দ্রী অনলাইন শপের জন্য শুভ কামনা চাই।’
ঐন্দ্রী অনলাইন শপের ফেসবুক পেইজ: ঐন্দ্রী অনলাইন শপ
এসসি/আরপি/২১/০৭/২০১৯
আরো পড়ুন:
ফেইথ বাইবেল চার্চের প্রতিষ্ঠাতা বিশপ সালমন স্বপন বোস মারা গেছেন
বিদেশে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা চলে গেলে সমাজ একসময় মেধাশূন্যতায় ভুগবে: পংকজ গিলবার্ট কস্তা