শিরোনাম :
ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন: আলোচনা সভা ও র্যালি
ময়মনসিংহে সভা-সমাবেশ, র্যালি এবং বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হলো আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস।
৯ আগস্ট ময়মনসিংহ আদিবাসী দিবস উদ্যাপন কমিটির আয়োজনে এ দিন ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরের প্রাণকেন্দ্র রেলস্টেশন সংলগ্ন কৃষ্ণচূড়া চত্ত্বরে এক আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টায় বিভিন্ন জাতিসত্ত্বার মানুষ এতে অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এবং উদ্বোধক ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সনাক এর চেয়ারম্যান জনাব ফেরদৌস আরা মাহমুদা হেলেন, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ময়মনসিংহ শাখার চেয়ারম্যান ও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক জনাব হিল্লোল নকরেক, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ময়মনসিংহ শাখার সেক্রেটারি ও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটির মহাসচিব জনাব অরন্য ই. চিরান প্রমুখ। এছাড়াও গারো, হাজং, কোচ, বানাই, সানতাল, উড়াও প্রভৃতি জাতিগোষ্ঠীর নেতানেত্রীবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে টিডব্লিউএ ময়মনসিংহ শাখা, গাসু, বাগাছাস, বাহাছাস, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ, আওয়া, ময়মনসিংহ সনাক, সচেতন নাগরিক সমাজ প্রভৃতি সংগঠনসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠন ও এর অঙ্গ সংগঠনসমূহ আলোচনা সভা ও র্যালিতে অংশ নেয়।
প্রধান অতিথি অধ্যাপক পাঠান বলেন, ‘আদিবাসীদের দাবিগুলো সর্বোচ্চ পর্যায়ে এসেছে। এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই কাজ করে যাবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইতিমধ্যে আদিবাসী কোটা দেওয়া হয়েছে।’
‘তাছাড়া আদিবাসীরা এখন কোটার বাইরেও তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছে। আদিবাসীদের এমন যোগ্যতা ও সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া দেখে আমরা একটি উন্নত বাংলাদেশকে দেখতে পাই’ বলেন অধ্যাপক পাঠান।
সনাকের চেয়ারম্যান মাহমুদা হেলেন বলেন, ‘এই আদিবাসী দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে ৩০-৩৫ কোটি আদিবাসী রয়েছে এবং প্রতি বছরই এই দিবসটি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশ অতি গুরুত্বের সাথে পালন করে আসছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আদিবাসীরাও এ দেশের জন্য সংগ্রাম করেছে। তবে কেন তারা এত নির্যাতিত হচ্ছে? আমরা চাই আদিবাসীরাও যেন তাদের ন্যায্য অধিকারগুলো যথাযথভাবে পায়।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ এখনও বাঙালি ব্যতীত অন্য কোনো সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীকে সংবিধানে আদিবাসী স্বীকৃতি দেয়নি। বাংলাদেশের শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের কথা থাকলেও তা পূর্ণ ও কার্যকর বাস্তবায়ন হয়নি।
তারা বলেন, ‘আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী আদিবাসী বলতে যাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ইত্যাদি রয়েছে তারাই আদিবাসী। তাহলে কেন বাংলাদেশে আদিবাসীদের উপজাতি, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসেবে ডাকা হবে। কেন আমাদের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বলে হেয় প্রতিপন্ন করা হবে? যার ফলে আমরা শোষণ, নির্যাতন, অবিচারের শিকার হচ্ছি। আমরা সরকারের কাছে এর উপযুক্ত জবাব চাই। আদিবাসীদের ন্যায্য অধিকার চাই।”
আলোচনা সভা শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি ও শোভাযাত্রা বের করা হয়ে শহরের গাঙ্গিনারপাড় থেকে প্রেসক্লাব মোড় হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবর একটি স্বারকলিপি পেশ করা হয়।
আরবি/আরপি/১৪ আগস্ট, ২০১৭