শিরোনাম :
যান্ত্রিক জীবনে, সজীব নিশ্বাসে ঘুরে আসুন বান্দুরার নৈস্বর্গে
কর্মব্যস্ত জীবনে পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু আনন্দ-বিনোদন আমরা সবাই চাই! যেকোনো দিন অথবা ঈদ, পূজো, বড়দিন কিংবা পূর্ণিমাসহ যেকোনো উৎসবের ছুটিতে শহরের কোলাহল ছেড়ে সবুজে বেষ্টিত নদীর ঘাট কিংবা ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা দর্শনে আসুন। ঢাকা শহর থেকে দোহার-নবাবগঞ্জে বাস বা প্রাইভেট গাড়িতে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘন্টার পথ।
যা দেখতে আসবেন নবাবগঞ্জে
নবাবগঞ্জ উপজেলার (১) আগলায় মহাকবি কায়কোবাদের বাড়ি (২) নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ (৩) কলাকোপা এলাকায় রাস্তার পাশে রয়েছে ‘খেলারাম দাদার বাড়ি’, ‘জর্জ বাড়ি’ ও ‘উকিল বাড়ি’। ঐতিহ্যের ধারক এই দুটি বাড়ির নির্মাণশৈলী, কারুকার্য আপনার মন কেড়ে নেবে। ঠিক একটু পাশ দিয়ে রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলে পেছনে দেখতে পাবেন হরিহর ঘোষের বাড়ির মহামায়া মন্দিরে ‘তাজা গাছ’। কথিত আছে সনাতন ধর্মীয় দেবী মহামায়ার স্বপ্নের আদেশে তিনি গাছটি নিজ বাড়িতে রোপণ করেন। তার একটু সামনেই ইছামতি নদীর দিকে এগিয়ে গেলে আনসার-ভিডিপি ক্যাম্পের পিকনিক স্পট। এই স্পটে রয়েছে পুরাতন ১৫টি জমিদার বাড়ি। ঐতিহ্যবাহী পুরাতন কীর্তি দেখতে দেখতে গরুর দুধের গরম চায়ে চুমুক দিতে পারেন নদীর পারের দোকানে। (৪) ১৭৭৭ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগীজদের তৈরি জপমালা রাণীর গির্জা, (৫) বান্দুরার ঐতিহাসিক ভাঙা মসজিদ (৬) যুগের সাক্ষী বান্দুরার হলিক্রশ স্কুল এন্ড কলেজ (৭) বান্দুরা ক্ষুদ্র পুষ্প সেমিনারী।
এ ছাড়া এখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠেছে (১) আদনান প্যালেস পার্ক (২) ওয়ান্ডারেলা গ্রীণ পার্ক (৩) কৈলাইলের রওশন গার্ডেন। পার্কগুলোতে শিশুদের আনন্দ-বিনোদনের সকল ব্যবস্থা রয়েছে। প্রবেশ ফি প্রযোজ্য।
যা দেখতে আসবেন দোহারে
ঢাকা জেলার দোহার উপজেলায় রয়েছে এ সময়ের বহুল পরিচিত মিনি কক্সবাজার নামীয় মৈনটঘাট ও মিনি পতেঙ্গাখ্যাত বাহাঘাট, কাশিয়াখালী বেড়িবাধের তিতপালদিয়া স্লুইসগেট। চোখজুড়ানো সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার মনোরম দৃশ্য এখন মৈনটঘাটে। এসব ভ্রমণে ইঞ্জিন নৌকায় ঘুরতে পারেন ২০-২৫ জন একসাথে। প্রতি ঘন্টা হিসেবে নৌকার ভাড়া নিতে পারেন ৫০০-৮০০ টাকায়। স্পিডবোটে পদ্মার বুকে ঘুরে বেড়াতে পারেন মাত্র ২০০০-৩০০০ টাকায় ৩০ মিনিটব্যাপী। চাইলে পদ্মার পাড়ে বা জেগে উঠা বালুচড়ে বেড়াতে পারেন মুক্ত বিহঙ্গের মতো। পদ্মার বুকে জেগে-উঠা বালুচর সূর্যের কিরণে চিক চিক দৃশ্য এবং পদ্মার ইলিশ মাছ ধরার দৃশ্য আপনাকে দেবে এক নতুন অভিজ্ঞতা। দুপুরে নদীর তীরে গড়ে-উঠা অস্থায়ী খাবার হোটেলে আপনি পাবেন পদ্মার তাজা ইলিশ ও চিংড়ি, ভর্তা বা ভাজি- আপনি যেভাবে চাইবেন। খাবারের আগেই দাম জেনে নিতে ভুলবেন না কিন্তু!
রাজধানীতে ফেরার পথে আরো দর্শণীয় অবকাঠামো হলো দোহারের মহাত্মা গান্ধীজীর আশ্রম, ডাকবাঙলো বীচ, আঠারোগ্রাম অঞ্চলের পূর্বপুরুষদের কবরস্থান ও শাইনপুকুর বীচ।
সূর্যাস্ত দেখার পর প্রত্যাশা থাকবে সূর্যোদয় দেখার। সেই প্রত্যাশা পূরণের জন্যও রয়েছে সুন্দর রাত কাটানোর ব্যবস্থা। সারাদিন ব্যস্ত সময়ের পর একটু বিশ্রাম অথবা পরিবার-পরিজন নিয়ে রাত কাটাতে চাইলে নবাবগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র বান্দুরাতে আছে ঢাকা ক্রেডিট গেস্ট হাউজ। সর্বাধুনিক সুবিধা সম্পন্ন এই গেস্ট হাউজে রয়েছে এসি/নন-এসি রুম, রয়েছে লিফট এবং জেনারেটরের সুবিধা। সেই সাথে রয়েছে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বাবুির্চ। এখানে আপনার চাহিদা অনুসারেই হতে পারে খাবারের মেন্যু, খাবারের জন্য পূর্বে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৮১১ ৬৯১ ৪৪৫ এবং বুকিংয়ের জন্য আগেই যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭৩১ ৮০৮ ০৪৭, ০১৮১১ ৬৯১ ৪৪৫, ০১৭০৯ ৮১৫ ৪২৩, ০৯৬৭৮৭৭১২৭০-২৫২১ অথবা ই-মেইল করতে পারেন: dcbmbp2019@gmail.com
যেভাবে যাবেন
ঢাকার গুলিস্তান (গোলাপশাহ্ মাজার) থেকে কলাকোপা হয়ে ‘এন মল্লিক’ গাড়িতে সরাসরি বান্দুরা যাওয়া যায়। ভাড়া প্রায় ১০০ টাকা (সময় ভেদে মূল্য পরিবর্তনযোগ্য)।
ঢাকার গুলিস্তান (গোলাপশাহ্ মাজার) থেকে মৈনটঘাট যেতে চাইলে ‘যমুনা পরিবহন’ বাসে উঠতে হবে। ভাড়া প্রায় ১২০ টাকা (সময় ভেদে মূল্য পরিবর্তনযোগ্য)।
কোথায় থাকবেন
কোথায় আপন মনে ঘুরে বেড়াতে চাইলে হাতে সময় নিয়ে তো যেতেই হয়। কিন্তু নতুন স্থানে বিপত্তি বাধে যখন থাকার প্রশ্ন ওঠে। সাথে পরিবার-পরিজন থাকলে তো কথাই নেই! এই সমস্যারও সুন্দর সমাধান রয়েছে। আর ঘুরে বেড়ানোর প্রশান্তি ধরে রাখতে বান্দুরায় রয়েছে ঢাকা ক্রেডিট গেস্ট হাউজ। মনোরম আধুনিক এই গেস্ট হাউজটি দর্শনার্থীদের জন্য একটি ভরসার স্থান।
আপনি যদি মনস্থ করেন ঢাকা ক্রেডিট গেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করবেন, তাহলে আপনি ‘এন মল্লিক’ বাসে করে বান্দুরা হলিক্রশ স্কুল এন্ড কলেজ গেইটের ঠিক বিপরীতে নামবেন। বাস থেকে নেমে বাম দিকে তাকালেই ঢাকা ক্রেডিট গেস্ট হাউজ দেখতে পাবেন। আপনার যাতায়াত/সকল দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার জন্য এসি/ননএসি প্রাইভেট বা মাইক্রোগাড়ির সুব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও ভ্রমণ করতে পারেন। তবে, আপনার সকল প্রয়োজনে ঢাকা ক্রেডিট গেস্ট হাউজ আপনাকে সহযোগিতা করবে। আগেই যোগাযোগ করতে হবে ০১৭৩১ ৮০৮ ০৪৭, ০১৭০৯ ৮১৫ ৪২৩ নম্বরে।
বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে বান্দুরার ঐতিহ্যবাহী রসগোল্লা, রকমারি মিষ্টি, দধি ও লরেন্স বেকারীর চাড়াবিস্কুট ক্রয় করতে ভুল করবেন না যেন!
ঢাকা ক্রেডিট গেস্ট হাউজের প্যাকেজ এ রকম: ২ দিন ১ রাত