ঢাকা ,
বার : রবিবার
তারিখ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৮ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা আন্তর্জাতিক নারীর ক্ষমতায়ন ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার নিয়ে ঢাকা ক্রেডিটে নারী দিবস উদযাপন

নারীর ক্ষমতায়ন ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার নিয়ে ঢাকা ক্রেডিটে নারী দিবস উদযাপন

0
325

ডিসিনিউজ।। ঢাকা
নারীর ক্ষমতায়ন, সমঅধিকার ও নারীর প্রতি সহিংতা বন্ধের অঙ্গিকার নিয়ে ঢাকা ক্রেডিটের বি কে গুড কনফারেন্স হলে দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট) এর নারী বিষয়ক উপ-কমিটির আয়োজনে বিশ্ব নারী দিবস উদ্যাপন করা হয়।

৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস হলেও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ৯ মার্চ, দিবসটি উদ্যাপন করে ঢাকা ক্রেডিটের নারী বিষয়ক উপ-কমিটি। কমিটির আহ্বায়ক পাপড়ী দেবি আরেং এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-আহ্বায়ক মঞ্জু মারীয়া পালমার উপস্থাপনায় প্রদ্বীপ প্রজ্জ্বলন, উদ্বোধনী নৃত্য, আলোচনা এবং সকল নারী ও উপস্থিত অতিথিদের ফুলের শুভেচ্ছা প্রদানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়।

‘নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হউক বিনিয়োগ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত নারী দিবসের শুভেচ্ছা বক্তব্যে সভাপতি ও ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট পাপড়ী দেবি আরেং বলেন, বিগত এক বছরে আমাদের দেশে নারী ও কন্যা শিশুদের উন্নয়নে নানা ধরণের আইন হয়েছে কিন্তু আইনের প্রয়োগ ও দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

নারীদের সমঅধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে পুরুষের এগিয়ে আসার প্রয়োজনকে মনে করিয়ে দিয়ে আরেং বলেন, “আমাদের পরিবারে যে ছেলে শিশুটি বেড়ে ওঠে তাকে নারীর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেয়া উচিত এবং একই সাথে পাঠ্যপুস্তকে নারী সম্পর্কে পজেটিভ লেখা যুক্ত করা প্রয়োজন।” তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে ওসমঅধিকার রক্ষায় সমাজের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের যুক্ত করতে হবে।

“নারীদের এগিয়ে নিতে পুরুষদের রোল মডেল হতে হবে,” তিনি যুক্ত করেন।

ঢাকা ক্রেডিটের নারী বিষয়ক উপ-কমিটি কর্তৃক আয়োজিত নারী দিবসে প্রায় ২০০ নারীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি ও ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুস গমেজ, দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস (কাক্কো) লি: এর চেয়ারম্যান ও ঢাকা ক্রেডিটের সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা, সেক্রেটারি মাইকেল জন গমেজ, ট্রেজারার সুকুমার লিনুস ক্রুশ, ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ওয়াইএমসিএস এর ন্যাশনাল জেনারেল সেক্রেটারি নিপুন সাংমাসহ ঢাকা ক্রেডিটের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মীবৃন্দ।

অতিথির বক্তব্যে ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট কোড়াইয়া সকলকে নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ক্রেডিট ইউনিয়ন আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। নারী ও কন্যা শিশুদের এগিয়ে নিতে ঢাকা ক্রেডিট বদ্ধপরিকর এবং আমরা তাদের উন্নয়নে বিনিয়োগ করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত।”

কোড়াইয়া বর্তমানের প্রেক্ষাপটে নারীর প্রতি সহিংসা, বাল্যবিবাহ বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়ে বলেন,“আমরা যার যার অবস্থানে থেকে নারীদের পাশে দাঁড়াই এবং নিশ্চিত করি আমার দ্বারা যেন কোনো নারী, শিশু ও মানুষ অন্যায্যতার শিকার না হয়।”

এইদিন অন্যান্য অতিথিদের বক্তব্যে নারীর প্রতি সহিংসতারোধ, নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় পুরুষ এবং পরিবারের ভুমিকা উঠে আসে।

বক্তাগণ বলেন, পরিবার থেকে প্রথমে নারীর সমঅধিকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। পরিবারের ছেলে শিশুটির সমান কন্যা শিশুটিকে গুরুত্ব দিতে হবে। নারীর সাথে পরিবারের কাজে পুরুষেরও উচিত অংশ নেয়া। পুরুষের উচিত নারীর অগ্রগতিতে সহায়তা করা এবং সুযোগ তৈরি করে দেয়া।

নারীর প্রতি সহিংসা বন্ধে নারীদেরই এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে বটমলী হোম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তণ শিক্ষক মার্থা সুফলা গুদা বলেন, “নারীর ক্ষমতায় একদিনে হবে না যার প্রমাণ সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ ও বিধবা বিবাহ প্রনয়নের মত ঘটনাগুলো। কাজেই আমাদের অধিকার আমাদেরই আদায় করে নিতে হবে।”

তিনি বলেন, পরিতাপের বিষয় হলো এখনো নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। সমাজ এগিয়েছে কিন্তু নারীরা সেই তুলনায় এগিয়ে যেতে পারেনি। কাজেই আমার সম্মান, আমার অধিকার আমাকেই আদায় করে নিতে হবে আমার ব্যক্তিত্ব দিয়ে।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি মাইকেল জন গমেজ এবং প্রাক্তন ডিরেক্টর পাপিয়া রিবেরু।

ডিরেক্টর মনিকা গমেজের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

এর আগে বিকেলে প্রদ্বীপ প্রজ্জ্বলন, নারী দিবসের গান, প্রার্থনা ও সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে ঢাকা ক্রেডিটের কর্মী ও কর্মকর্তাগণ নারী দিবস পালন করেন।

উল্লেখ্য, ১৯০৮ সালে আমেরিকায় প্রথম প্রায় ১৫,০০০ নারী একত্রিত হয়ে নারীর ভোটাধিকার ও বেতন ভাতা বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করে। ১৯৭৫ সালে সর্বপ্রথম জাতিসংঘ নারী দিবস পালন করে এবং তার সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে নারী দিবস পালনের আহ্বান জানান। ১৯৯৬ সালে সর্বপ্রথম নারী দিবসে জাতিসংঘ ‘অতীতের উদযাপন, ভবিষ্যৎ ঘিরে পরিকল্পনা’ কে প্রতিপাদ্য হিসেবে গ্রহণ কওে নারী দিবস পালন করে। এর পর থেকেই ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপি নারী দিবসটি আন্তজাতিকভাবে পালিত হয়ে আসছে। ঢাকা ক্রেডিটে ২০০৮ সাল থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস যথাযজ্ঞ মর্যাদার সাথে পালন করে আসছে।