ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৮ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ক্যারিয়ার বদলে যাওয়া অনুরার কথা

বদলে যাওয়া অনুরার কথা

0
1038

দিন বদলের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে প্রান্তিক নারীরা। বদলে যাওয়ার তালে গারো আদিবাসী নারীরাও শুরু করেছে তাদের দিন বদলের পালা।

ব্যবসা করে দিন বদলের মিছিলে সামিল হয়েছেন এমনই এক আদিবাসী নারী অনুরা কুবি (৪৬)। টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরের গহীন অরন্যের এক কোনে ৪ নং অরনখোলা জলছত্র গ্রামের সফল নারী উদ্যোক্তা অনুরা। স্বামী পংকজ আর. সাংমাকে। সংসারে রয়েছে দুই সন্তান।

অনুরা চার বছর আগে মাত্র ৮০ হাজার টাকা নিয়ে ২৫ মাইলে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। দোকানের নাম দিয়েছেন অনিন্দ ভ্যারাইটিজ স্টোর। প্রথমে হাতে গোনা কয়েকটি আইটেম থাকলেও এখন মহিলাদের যাবতীয় কসমেটিকসসহ দকমান্দা দকসারী (গারো ট্রেডিশোনাল ড্রেস) থ্রি-পিছ, ওরণা ছাড়াও বিভিন্ন কাপড় রয়েছে তার দোকানে। দিনে তার বিক্রি হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। মাস শেষে সমস্ত খরচ বাদে লাভ থাকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা।

অনুরা জানান, এছাড়াও বাড়িতে হাস-মুরগী পালন, শাকসবজী বাগান করে টাকা সঞ্চয় করছেন। অক্লান্ত পরিশ্রমী অনুরা ২ বছরে ৫ লক্ষ টাকা মূলধন সংগ্রহ করেছেন।

অনুরা ডিসিনিউজকে জানান, তার স্বামী পংকজের প্রত্যক্ষ সাহায্য সহযোগিতায়ই তিনি এত দূর পর্যন্ত আসতে পেরেছেন। স্বামী ঢাকায় বারিধারা, গুলশানে ডাক্তার এম. এ. ওহাব ক্লিনিকে কাজ করেন। এখন তার সংসারে আর অভাব নেই।

২০১৩ সালের ৮ মার্চ সনাক মধুপুর থেকে নারী উদ্যোক্তা হিসাবে পুরস্কৃত হন অনুরা। সে এখন বিভিন্ন সভা সেমিনারে মহিলাদের সঞ্চয় ও ব্যবসা করার জন্য উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন।

ব্যবসা করে বর্তমানে জলছত্র গ্রামে ১৮ শতাংশ জমি ক্রয় করে গড়ে তুলেছেন সাজানো গোছানো ইটের তৈরি বাড়ি।

অতীতে গারোদের কখনো ব্যবসা করতে দেখা যায়নি। গারো সমাজে ব্যবসা নিয়ে অনেকের ভ্রান্ত ধারণা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে সে সকল ভ্রান্ত ধারণাকে উপেক্ষা করে অনেক অবহেলিত পিছিয়ে পড়া গারো মহিলারা ব্যবসা করে সংসার পরিচালনার জন্য অর্থের যোগান দিচ্ছেন।

বাজার কমিটির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ব্যবসা করার জন্য একজন ব্যবসায়ীর যেসব গুণাবলি থাকা দরকার, তার সবই অনুরার মধ্যে রয়েছে। অনুরার ধৈর্য, মেধা, বুদ্ধি, সাহস তাকে এগিয়ে নিয়েছে।

দারিদ্রতা এখন অতিত স্মৃতি হয়ে গেছে অনুরার কাছে। এক সময়ে দারিদ্রতার কারণে কত স্বপ্নই দুঃস্পœ হয়ে ছিল। কিন্তু অনুরার সততা এবং কর্মনিষ্ঠা তাকে দিয়েছে নির্ভরতা এবং স্বচ্ছল পরিবার। তাকে অনুসরণ করে এখন অনেকেই ব্যবসার দিকে ঝুঁকেছে বলে দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, ২৫ মাইলের এই বাজারটি মিশন কর্তৃক পরিচালনা করা হচ্ছে।

আরবি/আরপি/২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭