ঢাকা ,
বার : শনিবার
তারিখ : ১৮ মে ২০২৪
বাংলা : ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা খেলাধুলা শততম টেস্টে লাল-সবুজের বিজয়: বাংলার ইতিহাসে যোগ হলো নতুন অধ্যায়

শততম টেস্টে লাল-সবুজের বিজয়: বাংলার ইতিহাসে যোগ হলো নতুন অধ্যায়

0
587

শততম টেস্টে ইতিহাসের খাতায় নাম লেখালো বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক জয়ে নিজেদের ক্রিকেট ইতহাসে শততম টেস্ট স্মরণীয় করে রাখলো বাংলাদেশ দল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট ম্যাচ জেতার গৌরব অর্জন করেছে টাইগাররা। ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় মুশফিকের দল। ফলে, ১-১ সমতায় শেষ হলো দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।

কলম্বোর পি সারা ওভালে ১৯১ রানের সহজ লক্ষ্যটা কঠিন করে ৬ উইকেট হারিয়ে টপকে যায় সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা অলআউট হয় ৩৩৮ রানে। জবাবে, ৪৬৭ রান তোলে টাইগাররা। লিড পায় ১২৯ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কানরা ৩১৯ রান তোলে। ফলে, টাইগারদের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ১৯১ রান।

কলম্বো টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৩৩৮ ও ৩১৯
বাংলাদেশ: ৪৬৭ ও ১৯১/৬

একদিকে নিজেদের শততম টেস্ট, অন্যদিকে বিদেশের মাটিতে শক্তিশালী কোনো দলের বিপক্ষে প্রথমবার জয়ের হাতছানি। সবমিলিয়ে কলম্বোর পি সারা ওভালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পঞ্চম ও শেষ দিনে বেশ রোমাঞ্চ নিয়েই ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ।

জয়ের লক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় অষ্টম ওভারে রঙ্গনা হেরাথের শেষ দুই বলে সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস বিদায় নেন। সৌম্য ১০ রান করে উপল থারাঙ্গার ক্যাচে পরিণত হন। পরের বলেই শূন্য রানে থাকা গুনারত্নেকে ক্যাচ দেন ইমরুল।

সৌম্য-ইমরুল দ্রুত ফিরে গেলেও উইকেটে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে থাকেন তামিম ইকবাল। তৃতীয় উইকেট জুটিতে সাব্বির রহমানকে নিয়ে ১০৯ রানের জুটি গড়েন। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২২তম হাফসেঞ্চুরি। তবে ব্যক্তিগত ৮২ রানের মাথায় দিলরুয়ান পেরেরার বলে তুলে মারতে গিয়ে চান্দিমালের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। অসাধারণ ইনিংসটি সাজাতে খেলেছেন ১২৫ বল, রয়েছে সাতটি চার ও একটি বিশাল ছক্কার মার।

তামিমের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাব্বির রহমান। টেস্ট মেজাজে খেলতে থাকা এই হার্ডহিটার পেরেরার দ্বিতীয় শিকারে এলবির ফাঁদে পড়েন। ৭৬ বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে ৪১ রান করেন তিনি। পেরেরার তৃতীয় শিকারে পরিণত হন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান সাকিব আল হাসান। ব্যক্তিগত ১৫ রানে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিওন মুখি হন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার। জয়ের জন্য দুই রান বাকি থাকতে বিদায় নেন মোসাদ্দেক (১৩ রান)। মুশফিক ২২ রানে আর মিরাজ ২ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা ৩১৯ রান তোলে। শেষ দিনের শুরুতে দিলরুয়ান পেরেরা ও সুরাঙ্গা লাকমাল বাংলাদেশি বোলারদের হতাশ করে ব্যাটিং করতে থাকেন। জুটি গড়েন ৮০ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছেন দিলরুয়ান পেরেরা। ৫০ রান করলেও খেলেছেন ১৭৪ বল। তবে অবশেষে রান আউটের ফাঁদে পড়েন তিনি। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে রান নেওয়ার সময় আউট হন তিনি। এক রান পরেই সাকিব আল হাসানের বলে মোসাদ্দেককে ক্যাচ দিয়ে ৪২ রানে ফেরেন লাকমাল। সাকিব মোট চারটি উইকেট দখল করেন। মোস্তাফিজ তিনটি উইকেট নেন।

সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনটি বাংলাদেশের পক্ষেই ছিল। কেননা এদিন লঙ্কানরা নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৪ রান তুলতে আট উইকেট হারায়। দিন শেষে মোট ২৬৮ রান করে। যেখানে লিড পায় ১৩৯ রানের। ওপেনার দিমুথ করুনারত্নের সেঞ্চুরিই (১২৬) তাদের রানের চাকা সচল রাখে। দিলরুয়ান পেরেরা (২৬) ও সুরাঙ্গা লাকমাল (১৬) অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। চতুর্থ দিন বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে দুর্দান্ত ভূমিকা রাখেন মোস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান। দু’জনেই তিনটি করে উইকেট তুলে নিয়ে লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংসে ধস নামাতে সাহায্য করেন। মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম একটি করে উইকেট নেন।

এর আগে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা নিজেদের প্রথম ইনিংসে দিনেশ চান্দিমালের সেঞ্চুরিতে ৩৩৮ রান করতে সমর্থ হয়। জবাবে টাইগাররা দাপট দেখিয়ে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে। সাকিব আল হাসানের অসাধারণ সেঞ্চুরির সুবাদে ৪৬৭ রান করে হাতুরুসিংহের শিষ্যরা। ম্যাচে পায় ১২৯ রানের লিড।

৪র্থ দিনে তামিমের ৮২ রানের লড়াই আর সাব্বিরের ৪১ রানের খাতাই বাংলাদেশ দলের জয়ের কারণ হয়ে উঠেছে।

আরবি/ আরপি/ ১৯ মার্চ, ২০১৭