ঢাকা ,
বার : শনিবার
তারিখ : ১৮ মে ২০২৪
বাংলা : ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ফিচার পল্টন হাওলাদারের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প (ভিডিও)

পল্টন হাওলাদারের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প (ভিডিও)

0
495

ডিসিনিউজ ।। ঢাকা

সত্যিকার অর্থে ঢাকা ক্রেডিট আমাদের জন্য একটি আশীর্বাদ। ঢাকা ক্রেডিট না থাকলে হয়তবা আমাদের যে দুর্দশা- অভাব অনটন ছিল তা থেতে আমরা উঠে আসতে পারতাম না।

ঢাকা ক্রেডিট থেকে ঋণ নিয়ে কীভাবে ঘুড়ে দাঁড়িয়েছেন সেই গল্পই বলছেন পল্টন হাওলাদার।

আমি মূলত ঢাকায় আসি ২০০২ সালে, চাকরি না পেয়ে বিভিন্ন কাজ করি। আমার এক কাকার ঢাকা ক্রেডিটে বই ছিল তিনি আমাকে বললেন তুমি যেহেতু ঢাকায় আসছ ঢাকা ক্রেডিটে সদস্য হলে কিছু অর্থ জমায়ে রাখা যাবে। আমি তাকে হ্যাঁ বলার পরে উনি আমাকে ঢাকা ক্রেডিটের একটা ফর্ম এনে দিলেন, এরপর আমি ঢাকা ক্রেডিটে সদস্য হওয়া জন্য আবেদন করি। ঢাকা ক্রেডিট আমাকে সদস্যপদ দেয়, আমার সদস্য হল ২০৬২২ নাম্বার। আমি প্রথম লোন নিয়ে ছিলাম ৫০০০ টাকা, উদ্দেশ্য ছিল ঘরের ফার্নিচার ক্রয় করব। ২০১১ সাল পর্যন্ত একটা ভালো কম্পানী আল ফ্রেন্ড ফ্রেস ওয়াটার সিস্টেম লিঃ ওখানে ম্যানেজারের পরের পদ সুপারভাইজার পদে আমি চাকরি করি। পরবর্তীতে আমার কাজের সুনামের জন্য ওরা আমাকে হেড অফিসে নিয়ে যান, ওনারা আমাকে গাড়িতে নিয়ে যেতেন এবং গাড়িতে দিয়ে যেতেন কিন্তু রাস্তায় যানজট থাকার কারণে আমার অনেক সমস্যা হতো। তখন আমার স্ত্রীর সাথে আমি আলাপ করলাম আমার সমস্যার কথা, আমরা সিদ্ধন্ত নিলাম কিছু করার। আমি বললাম ইলেকট্রনিক্সের কাজ জানি এবং লাইসেন্সও আছে এটা করা যায়। আমার স্ত্রী বলল তুমি যদি ফার্মেসি দাও তবে আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারব। আমরা অনেক চিন্তা ভাবনা করলাম এবং প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলাম আর ঈশ্বর আমাদের উত্তর দিল তুমি ফার্মেসির ব্যবসা কর। আমার স্ত্রী তখন টঙ্গী স্টেশন রোড আবেদা হাসপাতালে কাজ করে, এই হাসপাতালে ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা আছে আর এমপি অর্থাৎ গ্রাম্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ওখান থেকেই আমাকে ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করে। ওই সময় আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আমি সেখানে ভর্তি হওয়ার পরে ট্রেনিং নেই এবং সুনামের সহিত পাশ করি। নিজের ঔষধের ব্যবসা করতে গেলে অনেক টাকা পয়সার প্রয়োজন হয়। তখন ঢাকা ক্রেডিটে লোনের আবেদন করি, আর সত্যিকারে ঢাকা ক্রেডিট সেই লোনের আবেদনে সাড়া দেয় আর আমাকে ২ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা লোন দেয়। আমি যেখানে চাকরি করতাম সেখান থেকেও কিছু টাকা পাই। পরবর্তীতে আমরা এই টাকা দিয়ে দোকান শুরু করি। আমাদের মধ্যে কথা ছিল যে আমরা হালাল এবং ভালো ঔষধ বিক্রি করব, সেই ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমরা হালাল এবং ভালো ঔষধ বিক্রি করি। ঈশ্বরের আসলে অসীম দয়া, যা কল্পনা করার মতো না, আমাদের আর পিছনের দিকে তাকাতে হয় নাই। ২০১৩ সালে আবার বিকাশের ব্যবসা শুরু করলাম, সেই সময় ঢাকা ক্রেডিটে আবার ৫ লক্ষ টাকা লোনের আবেদন করলাম। ঢাকা ক্রেডিট ৭ দিনের মধ্যে আমার সেই লোনের আবেদন মঞ্জুর করে, সেই টাকা দিয়েই আমি ব্যবসা করি। ২০১৪-১৫ সালের দিকে ব্যবসা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। ঢাকা ক্রেডিটে আমার স্ত্রীর বই থেকে ৬ লক্ষ টাকা আবার লোনের আবেদন করি, ঢাকা ক্রেডিট সেই টাকা অতি সত্ত্বর মানে যত দ্রুত দেয়া সম্ভব আমাকে সেই টাকা দেয়। আমি তখন ১১ লক্ষ টাকা দিয়ে বিকাশের ব্যবসা শুরু করি। ১১ লক্ষ টাকায় ২ লক্ষ টাকা হাতে থাকতো। আর বাকী টাকা আমার চালান কাটকো, প্রচুর ব্যবসা হতো, ঔষদেরও খুব ভালো বিক্রি ছিল। ব্যবসা করতে করতে এক সময় ২০১৭ সালে ঈশ্বরের এমন আশীর্বাদ এলো আমার জীবনে, প্রচুর লাভবান হলাম যে আমি বিকাশে মাসে ৬০ হাজার, ৫০ হাজার, ৪০ হাজার টাকাও ইনকাম করেছি। আমার হাতে কিছু টাকা ক্যাশ হল প্রায় ১০ লক্ষ টাকার উপরে। পরবর্তীতে চিন্তা ভাবনা করলাম একটু জায়গা সম্পত্তি করলে ভাল হয়। পাগাড় ঝিনু মার্কেটে ৭৭ নাম্বার প্লট আমি পাই। সেখানে আমি গিয়ে দেখি যে ২ কাঠা প্লটের দাম ২৫ লক্ষ টাকা কিন্ত আমার কাছে আছে ১২ লক্ষ টাকা। আমি ঢাকা ক্রেডিটে আবার ৯ লক্ষ টাকার আবেদন করি যে আমার ৯ লক্ষ টাকা হলে আমার হয়ে যাবে আর বাকীগুলো ঢাকা ক্রেডিটে আমার অনান্য সেভিংস থেকে হয়ে যাবে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট পঙ্কজ বাবু ছিলেন, সেই ৯ লক্ষ টাকার আবেদনে তিনি সাড়া দেন। সেই ৯ লক্ষ টাকা এবং আমার স্ত্রী অল্প অল্প করে জামনো ১ লক্ষ টাকা দেয় জমি ক্রয় করার জন্য। ঢাকা ক্রেডিট যে লোন আমি নিয়েছিলাম ওটা ছাড়া আসলে আমার জমি কেনা হতো না। আরেকটু বলতে চাই ২০১৩ সালে ঢাকা ক্রেডিট থেকে ২ লক্ষ টাকা নিয়ে আমি দেশের বাড়িতে ১০ শতাংশ জায়গা কিনেছি, এটা সম্পূর্ণই ঢাকা ক্রেডিটের কৃতিত্ব বলা যায়। এই ঢাকা ক্রেডিট ছিল বিধায় আমার মতো ছেলে পাগাড় ঝিনু মার্কেটে ২ কাঠা জায়গা কিনেছি এবং তার উপরে বাড়ি করে বসবাস করতে পারছি।

সত্যিকার অর্থে ঢাকা ক্রেডিট আমাদের জন্য একহটা আশীর্বাদ। ঢাকা ক্রেডিট না থাকলে হয়তবা আমাদের যে দুর্দশা- অভাব অনটন ছিল তা থেকে আমরা উঠে আসতে পারতাম না। ঢাকা ক্রেডিট সত্যিকারে আমাদের জন্য আশীর্বাদ। আমরা বিশ্বাস করি ঢাকা ক্রেডিট আমাদের আশে আছে বলে আমরা এখনও মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারতেছি। আমাদের স্বপ্ন আমাদের দুটো ছেলে আছে তারা যেন ডাক্তার হতে পারে। তবে ডাক্তারি পড়ানোর জন্য বিদেশে পাঠাতে হয় এর জন্য অনেক টাকা পয়সার দরকার। আমরা চাই ঢাকা ক্রেডিট যেন আমাদের সেই সাহায্য দিয়ে সহযোগিতা করে এবং আমাদের ছেলেদের ডাক্তার বানাতে পারি।