ঢাকা ,
বার : শনিবার
তারিখ : ১৮ মে ২০২৪
বাংলা : ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা প্রবন্ধ মহান মুক্তিযুদ্ধে খ্রিষ্টান মিশনারিদের অবদান

মহান মুক্তিযুদ্ধে খ্রিষ্টান মিশনারিদের অবদান

0
1305

মিথুশিলাক মুরমু

মুক্তিযুদ্ধকালীন স্বাধীন বাংলার অস্থায়ী সরকার গঠিত হয় ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে ১০ এপ্রিল। অস্থায়ী সরকার শপথগ্রহণ করে ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলাতে (বর্তমান মুজিবনগর উপজেলা)।

সরকার গঠনের পরবর্তীকালে ১১ জুলাই মুক্তিবাহিনী গঠন করে বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। অস্থায়ী সরকার শপথের দিনে মেহেরপুরের কাছে ভবেরপাড়া খ্রিষ্টান মিশন ভবনে উত্তোলিত হয় স্বাধীন বাংলা সরকার গঠনের প্রথম পতাকা।

পূর্বের সারা রাত জেগে এটি তৈরি করেছিলেন সিষ্টার ক্যাথরিন গনজালভেস। বোধকরি এই পতাকা উত্তোলন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনে, আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এ খ্রিষ্টান পাড়ার খ্রিষ্টবিশ্বাসীগণ সেদিন গার্ড অফ অনার প্রদানসহ ঐতিহাসিক ভূমিকা ও সাক্ষ্য বহন করে চলেছেন। ইতোপূর্বে দেশের অভ্যন্তরে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মার্চ মাসে সূত্রাপুরের কাগজীটোলায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকাটি উত্তোলন করেছিলেন লেখক আবু হেনা মোস্তফা কামাল। পরবর্তীকালে এই পতাকাসহ আনুসাঙ্গিক ঐতিহাসিক নির্দশনগুলো বিগত ৩০শে এপ্রিল ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে হস্তান্তর করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে অনেক ফাদার, রেভারেন্ড, মিশনারি, সিস্টার ও খ্রিস্টান বিশ্বাসী স্বতঃর্স্ফূতভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।

ফাদার ইউজিন হোমরিক, ফাদার এডমন্ড গেডার্ট, ফাদার বেঞ্জামিন লাবে, বিশপ ব্লেয়ার, রেভা. ম্যাকবেথ, রেভা. জিম ম্যাককিনলী, রেভা. আর. টি. বাকলী, জ্যাবিল জেকব্স্, মার্ক টাকার, লেসলী ওয়েংগার, ডা. ভিগো অলসেন, ডা. ডন কেচাম, নিউটন সডি, ফাদার কান্তন, রেভা. হেরালাড উইলিয়াম নিখলিন, ফাদার জেকোমিলি, ফাদার পিনোস, ফাদার বেরোনেসী, ফাদার মারিও ভেরোনিসি, মাদার তেরেসা, পি. এ সাংমা, ফাদার উইলিয়াম বি. টিম, শহীদ ফাদার ইভান্স, ওডারল্যান্ড, ফাদার মারিও রিগন-এর নাম বার বার উচ্চারিত হলেও নিভৃতচারী কয়েকজনের নাম আড়ালেই থেকে গেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের গৌরবদৃপ্ত ঘটনাগুলো সংক্ষিপ্তভাবে উল্লে¬খ করার প্রয়াস চালিয়েছিলেন ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় নরওয়ের প্রথিতযশা সাংবাদিক অডভার মুনকস গার্ড আসেন রাজশাহীতে। তাঁর উদ্দেশ্য ছিলো বাংলার মুক্তিকামী মানুষ ও যুদ্ধপরিস্থিতির সংবাদ নরওয়েবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া। যুদ্ধকালীন নয় মাস রাজশাহীতে অবস্থান করে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের প্রতি পাক-বাহিনীর বর্বরতার এই প্রতিবেদন নরওয়ের পত্রিকায় প্রেরণ করেন। পাক-বাহিনীর পৈশাচিকতা আচরণ তাঁর মনের গভীর রেখাপাত করেছিলো।

স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বাংলাদেশকে নরওয়ের স্বীকৃতি প্রদানেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। অডভার মুনকস গার্ড রাজশাহী মিশন হাসপাতালের তৎকালীন সুপারিনটেনডেন্ট ডা. ইউ এন মালাকারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ পুনর্গঠনে ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে নরওয়ের ক্রিস্টিয়ানস্যান্ড সিটি এবং রাজশাহী সিটির মধ্যে ভ্রাতৃপ্রতীম সম্পর্ক সৃষ্টি করে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন যা আজো অব্যাহত রয়েছে। বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে বিগত ২৪ অক্টোবর ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘ দিবস ও স্যান্ড সিটির আনভিলিং সেরিমনিতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপিত হয় বাংলাদেশ পরিচিত ম্যুরাল। ম্যুরালটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের জাতীয় চার নেতা, মুক্তিবাহিনী এবং পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের চিত্রসহ বিভিন্ন চিত্র স্থান পেয়েছে।

বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে বিগত ২৪ অক্টোবর ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘ দিবস ও স্যান্ড সিটির আনভিলিং সেরিমনিতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপিত হয় বাংলাদেশ পরিচিত ম্যুরাল।

দুই অংশে বিভক্ত মোট ১১০৫ বর্গফুটের ম্যুরালের ১০০০ বর্গফুটে আছে মূলচিত্র ও ১০৫ বর্গফুটে আছে চিত্রের শিরোনাম। ম্যুরালটি উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। এটি উন্মোচনের মাধ্যমে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ম্যুরাল স্থাপিত হলো। আরেক নওয়েজিয়ান মিশনারি রেভা. কম কে মিশনারী কাজে নিয়োজিত ছিলেন সিলেট-মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ অঞ্চলে। তিনিও এই অঞ্চলের খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের জীবন, যানমাল রক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বদন্যতায় সেদিন পাকিস্তানি সেনাদের হাত থেকে স্বর্গীয় সুবোধ সরকার, স্বর্গীয় সুষমা সরকার, সন্ধ্যা সরকার, স্বর্গীয় প্রদীপ সরকার (কাজল), ফিলিপ সরকার (হিরু), মাইকেল সরকার (পান্না) ও মৃদুল সরকার জীবন ফিরে পেয়েছিলেন। ফাদার এল. ডবি¬উ সি. রিগবী মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বরিশালে ছিলেন। তিনি মুক্তিকামীদের সাহায্য ও সহযোগিতা করতেন। যুদ্ধের ডামাডোলে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বরিশাল পরিদর্শনে গমন করলে ফাদার তাঁকে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে কৌশলে সবই জানিয়ে দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ হাইকমিশনার অবগত হয়েছিলেন বরিশাল অঞ্চল তথা পাকিস্তানী বাহিনীর বর্বরতা সম্পর্কে। তিনি একটি স্বহস্তে লিখিত রিপোর্ট প্রদান করেছিলেন, যেখানে পাক-বাহিনীর বর্বরতা এবং বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছিলেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দ মুক্তিযুদ্ধে এদেশের অনেক খ্রিষ্টান প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা (খ্রিষ্টান ত্রাণ ও পুনর্বাসন সংস্থা, দু’টি কলেজ, ৫০টি হাইস্কুল, ২৬৫টি প্রাইমারী স্কুল, ১২টি হাসপাতাল), অসংখ্য গির্জা ও খ্রিষ্টান গৃহ বহু সংখ্যক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বেসামরিক ব্যক্তিকে আশ্রয়দানসহ যথাসাধ্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। তাছাড়া পাক-সেনাবাহিনীর আক্রমণ থেকে পলায়নপর লক্ষ লক্ষ লোককেও খাদ্য, বস্ত্র ও আশ্রয়দান করা হয়। আবার এসব জায়গাতেও চলেছে বর্বর নির্যাতন।

বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব মহাজোট সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ১২৪ জন বিদেশীকে সম্মাননা প্রদান করছে। ১২৪ জন বিদেশীর মধ্যে রয়েছে ৪১ জন ভারতীয়, ১০ জন রাশিয়ান, যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ জন, যুক্তরাজ্যের ১২ জন, জার্মানের ৪ জন পাকিস্তানের ৫ জন।

এ ছাড়াও অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, অস্ট্রিয়া, যুগোস্লাভিয়া, ইতালি, জাপাান, নেপাল, আর্জেন্টিনা, ভেনিজুয়েলা, সুইজারল্যাল্ড, ভুটান, শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, পোলেন্ড, ভিয়েতনাম, আয়ারল্যান্ড-এর অধিবাসীরা আমাদের মুক্তির সংগ্রামে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সামিল হয়েছিলেন। এ দীর্ঘ তালিকায় প্রত্যাশিত নামগুলো পেলেও কিছু নাম আড়ালেই থেকে গেছে। নামগুলো হচ্ছে- ফাদার ইউজিন হোমরিক, ফাদার এডমন্ড গেডার্ট, ফাদার বেঞ্জামিন লাবে, বিশপ বে¬য়ার, রেভা. ম্যাকবেথ, রেভা. জিম ম্যাককিনলী, রেভা. আর.টি.বাকলী, জ্যাবিল জেকব্স্, মার্ক টাকার, লেসলী ওয়েংগার, ডা. ভিগো অলসেন, ডা. ডন কেচাম, নিউটন সডি, ফাদার কান্তন, রেভা. হেরালাড উইলিয়াম নিখলিন, ফাদার জেকোমিলি, ফাদার পিনোস, ফাদার বেরোনেসী, ফাদার মারিও ভেরোনিসি প্রমুখ। অন্যদিকে প্রত্যাশিত নামগুলো হচ্ছে- মাদার তেরেসা, পি. এ সাংমা, ফাদার উইলিয়াম বি. টিম, শহীদ ফাদার ইভান্স, ওডারল্যান্ড, ফাদার মারিও রিগন। আমরা মনে করি, উপরিউক্ত নামধারী ব্যক্তিগণ বাংলার ভূখন্ডে থেকে মুক্তিযুদ্ধে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। সাধারণ মানুষকে খাদ্য, আশ্রয় ও প্রয়োজনে নিরাপত্তা দিয়েছে; মুক্তিযোদ্ধাদের অর্থ দিয়ে বেগবান করেছে।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৮শে মার্চ, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে একটি জাতীয় দৈনিকের সচিত্র সংবাদ ছিলো ‘যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে অভিজাত গির্জা ওয়েষ্টমিনষ্টার অ্যাবিতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়’ (দৈনিক প্রথম আলো)। বলা হয়, ‘এ সময় গির্জায় বাংলাদেশের মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।’ ল-নের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ওয়েষ্টমিনষ্টার অ্যাবি ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রার্থনাকেন্দ্র। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর জাতীয় দিবসে এখানে বিশেষ প্রার্থনার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন ও প্রার্থনা অনুষ্ঠানে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের তৎকালীন হাইকমিশনার এম এ হান্নান এবং হাইকমিশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে অনেক খ্রিষ্টান প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে আলাপনে জেনেছি, মুক্তিযুদ্ধকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ, মুক্তিযোদ্ধাসহ সাহায্যকারী দেশ এবং ব্যক্তিবর্গের জন্য হাঁটু গেড়ে চোখের জলে প্রার্থনা করেছেন। শরণার্থী শিবিরেও রবিবারিক উপাসনায় মিলিত হতেন, পরিবারে সম্মিলিতভাবে প্রার্থনা করেছেন; যেন স্বর্গীয় ঈশ্বর আহত, শহীদ কিংবা নির্যাতিতদের সহায় হোন, বিপদ-সংকুল থেকে রক্ষা করেন। যারা এই মানবতাবিরোধী কর্মকা-ে জড়িত ছিলেন, তাদের হৃদয় যেন পরিবর্তন করেন; তারা যেন সুমতি ফিরে পান। খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করেছেন, পিতা ঈশ্বর তাঁর নির্দিষ্ট সময়েই সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ করেছেন। আমার দেশের খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা এখনও সর্বদাই দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে প্রতিদিন সকাল-বিকেল প্রার্থনা উৎসর্গ করেন।

কোনো বিশেষ দিন উদ্যাপন কিংবা অনুষ্ঠান হলে স্বতন্ত্রভাবে রাষ্ট্রনায়ক, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীবর্গ, সাংসদ এবং রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের জন্য স্বর্গীয় প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা এবং শক্তি যাচনা করে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশকে সত্যিতে রূপায়িত করতে উজ্জীবিত করুন।
বিগত এপ্রিল ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে ভ্যাটিকানের পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট-এর আন্তঃধর্মীয় সংলাপ দপ্তরের প্রেসিডেন্ট কার্ডিনাল জীন লুইস তুরান এর বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে এক বাণীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ-এর তৎকালীন মাননীয় রাষ্ট্রপতি মো. জিল¬ুর রহমান বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অনেকেই প্রত্যক্ষভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছেন। মিশনারি প্রতিষ্ঠানগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ তাঁদের আশ্রয়ে নিরাপদে থেকেছে। এসব ঘটনা বড়ই গর্বের।’

ইতোপূর্বে ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জানুয়ারি তেজগাঁয়ে অনুষ্ঠিত বড়দিন-নববর্ষ পুনর্মিলনীতে রাষ্ট্রপতি লে. জে. জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের স্বাধীনভাবে তার নিজস্ব ধর্ম পালনের অধিকার আছে … স্বাধীনতা সংগ্রামে খ্রিষ্টানদের ভূমিকার কথা দেশবাসীর অজানা নয়। এ সংগ্রাম উত্তরকালে দুঃস্থ ও সর্বহারা মানুষের মধ্যে খ্রিষ্টানদের নিঃস্বার্থ ও অক্লান্ত সেবামূলক কাজের কথা দেশবাসী শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে…আপনাদের সেবামূলক কাজ নিঃসন্দেহে অভিনন্দনযোগ্য। জাতি পুনর্গঠনের কোনো কাজে খ্রিষ্টানরা পিছিয়ে নেই। সেবাই বাংলাদেশের খ্রিষ্টানদের পরিচয়। বাংলাদেশের খ্রিষ্টানগণ স্কুল, সমাজকল্যাণ সংস্থা ও হাসপাতালের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে কাজ করায় আগ্রহী। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মুক্তিযুদ্ধে খ্রিষ্টানদের অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’ পাক-বাহিনীর হাত থেকে দ্বিতীয় জীবন পাওয়া সুনীল সরকার নিজে কথা ও সুর দিয়ে এই স্বাধীনতার গানটি গেয়েছিলেন:
‘তোরা কে কে যাবি আয় বঙ্গবন্ধুর নায়
মোস্তফা ধরেছে হাল হাসিম বৈঠা বায়।।
ও ভাইরে ভাই ১১ খানা তক্তা দিয়া
নাও খানা গড়াইয়া
তাতে ৬ খানা গোড়া যে লাগায়
ঈমান করেছে মাস্তুল সবুজ নিশান দেখা যায়।।
ও ভাইরে ভাই নৌকায় মাঝখানেতে একটি দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
সেথায় মানিক চৌধুরী দাঁড়াইয়া মানিক মিয়া
দাঁড়াইয়া জারি গান গায়।।’